দেশ ছেড়েছেন 'ছাগলকাণ্ডে'র মতিউর

 দেশ ছেড়েছেন 'ছাগলকাণ্ডে'র মতিউর

ছাগলকাণ্ডে আলোচনায় আসার পর থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য মতিউর রহমানের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। তাঁর বিভিন্ন বাসভবনে খোঁজ নিয়েও সন্ধান মেলেনি। এমনকি কোরবানির ঈদের ছুটির পর অফিস খুললেও তিনি আর অফিসে আসেননি। এ সময়ের মধ্যে তিনি প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দেশ ছাড়ার সব প্রস্তুতি সেরে ফেলেন।

গতকাল রবিবার বিকেলে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে মতিউর পালিয়ে গেছেন বলে তাঁর ঘনিষ্ঠ একাধিক কাস্টমস কর্মকর্তা জানান। এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তাঁর দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করতে তিন সদস্যের একটি টিম গঠন করে। একই দিনে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে তাঁকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত (ওএসডি) করা হয়। তিনি সোনালী ব্যাংকের পরিচালক পদও হারান।

সবকিছুর পেছনে রয়েছে ‘ছাগলকাণ্ড’। ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাতের ১৫ লাখ টাকার ‘ছাগল কেনা’ ইস্যুতে মতিউর বিতর্কে পড়েন। ইফাতের ছাগল কেনার বিষয়টি প্রথমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয় এবং তা ‘টক অব দ্য কান্ট্রিতে’ পরিণত হয়। এরপরই তাঁর ও তাঁর পরিবারের বিপুল সম্পদের চিত্র বেরিয়ে আসে।

মতিউরের ঘনিষ্ঠ কাস্টমস কর্মকর্তাদের মতে, আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে তিনি ভারতে পালিয়েছেন। এরপর তিনি ভারত থেকে সরাসরি দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রভাবশালী একটি সিন্ডিকেট তাঁকে দেশত্যাগে সহযোগিতা করেছে।
m mm
জানা গেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি ভাইরাল হওয়ায় তিনি আতঙ্কে ছিলেন, কারণ তাঁর চেহারা সবার পরিচিত। তবে প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের পরামর্শে তিনি মাথার চুল ফেলে টাক হয়ে দেশ থেকে পালান। মূলত চেহারা আড়াল করার জন্য তিনি এই কৌশল নিয়েছেন।

এর আগে ধানমণ্ডি, কাকরাইল, গুলশানসহ মতিউরের পরিবার ও আত্মীয়স্বজনের ঠিকানায় বিভিন্ন সূত্রে খোঁজ নিয়ে কোথাও তাঁকে পাওয়া যায়নি। ঈদের ছুটি শেষে তাঁকে অফিসেও দেখা যায়নি। এরপর থেকেই সবার মনে প্রশ্ন ছিল, ‘মতিউর এখন কোথায়?’

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, ছাগলকাণ্ডের পর এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর ছেলেকে অস্বীকার করে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে আত্মগোপনে যান। সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হয়ে নিজেকে আড়াল করে রাখেন। মুঠোফোনেও যোগাযোগ সীমিত ছিল। সেই সময়ে তিনি তাঁর ছেলেকে নিরাপদে মালয়েশিয়ায় পাঠিয়ে দেন বলে নিশ্চিত করা হয়েছে।
mm m
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগে পড়াশোনা করা মতিউর রহমান অনেক কম্পানির ছায়া পরিচালক। একাধিক ছোট কম্পানি শেয়ারবাজারে আনার মাধ্যমে তিনি বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে পরিচিত হন। শেয়ারবাজার কারসাজিতে জড়িতদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে।
 

Post a Comment

0 Comments