দেশে ব্রাহামা গরু আমদানি নিষিদ্ধ হওয়ার কারণ

 দেশে ব্রাহামা গরু আমদানি নিষিদ্ধ হওয়ার কারণ

সম্প্রতি সাদেক এগ্রোর বংশ মর্যাদাসম্পন্ন গরুর বিজ্ঞাপনে বিশাল আকারের ব্রাহামা গরু সবার নজর কাড়ে। কয়েক বছর আগে প্রতিষ্ঠানটি জালিয়াতি করে এই জাতের গরু আমদানি করে, তারপরই কোটি টাকার দামের এসব গরু আলোচনায় আসে। ২০১৬ সালের একটি নীতিমালায় ব্রাহামা জাতের গরু আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়। তবে আমদানি নিষিদ্ধ হলেও বাংলাদেশে এই জাতের গরু উৎপাদন ও পালন বৈধ। বিবিসি বাংলার একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ঠিক কী কারণে ব্রাহামা গরু বাংলাদেশে আমদানি নিষিদ্ধ।

বাংলাদেশে মাংসের চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্রাহামা গরুর চাহিদাও বেড়েছে। বলা হয় এই জাতের গরু পালন সহজ ও লাভজনক, এবং অন্যান্য জাতের চেয়ে ব্রাহামা গরু রোগ বালাইয়ে কম আক্রান্ত হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে কৃত্রিম প্রজনন পদ্ধতিতে ব্রাহামা গরু উৎপাদন করা হচ্ছে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কৃত্রিম প্রজনন বিভাগের তৎকালীন উপপরিচালক ডা. ভবতোষ কান্তি সরকার জানান, ব্রাহামা গরু মূলত মাংসের জাত বলে পরিচিত। এ গরু প্রচুর মাংস উৎপাদন করলেও তাদের দুধ উৎপাদন কম। ফলে খামারিরা যদি ব্যাপক হারে ব্রাহামা উৎপাদন করে তাহলে দেশে গরুর দুধের উৎপাদন একেবারেই কমে যাবে। মূলত সেই কারণেই বেসরকারি পর্যায়ে ব্রাহামা গরু আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
a aa
প্রাণী বিশেষজ্ঞরা বলেন, ব্রাহামা গরুর মাংসের স্বাদ দেশি গরুর মতো। এর গায়ে চর্বি কম হয়, যা পুষ্টিগুণে বেশি। সরকারের আশঙ্কা, ব্যাপক হারে ব্রাহামা গরু উৎপাদন হলে খামারিরা দুধ উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত হোলস্টেইন ফ্রিজিয়ান জাতের গরুর উৎপাদনে আগ্রহ হারাবে। মূলত দেশের দুগ্ধ উৎপাদন খাতের সুরক্ষায় ব্রাহামা গরু আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

ডা. ভবতোষ কান্তি জানান, সরকার যুক্তরাষ্ট্র থেকে ব্রাহামা জাতের গরুর শুক্রাণু এনে স্থানীয় খামারিদের মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে এই জাতের গরু উৎপাদন শুরু করে। ২০০৮ সালে চালু হওয়া ‘বিফ ক্যাটল ডেভেলপমেন্ট’ প্রকল্পের মাধ্যমে বর্তমানে প্রায় ৫০টির মতো জেলায় এ কর্মসূচি চলছে।
aa a
ব্রাহামা গরু মূলত এর উচ্চ তাপমাত্রা সহনশীলতা, দীর্ঘ জীবন এবং ক্রস-ব্রিডিংয়ে উচ্চফলনের জন্য জনপ্রিয়। একটি পূর্ণবয়স্ক ব্রাহামা ষাঁড়ের ওজন ৮০০-১০০০ কেজি হতে পারে, আর একটি পূর্ণবয়স্ক ব্রাহামা গরুর ওজন ৫০০-১০০০ কেজি হয়। ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রায় ব্রাহামা গরু সুস্থ থাকতে পারে। উচ্চ তাপমাত্রা সহনশীলতার কারণে এ গরুর রোগবালাই কম হয়। সাধারণত একটি ব্রাহামা গরু ১৫ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত বাঁচে।

Post a Comment

0 Comments