আ’লীগের লোকজন এত কুকর্ম করেছে যে তারা বন-জঙ্গলেও আশ্রয় পাচ্ছে না, বললেন জামায়াত আমির।

 আ’লীগের লোকজন এত কুকর্ম করেছে যে তারা বন-জঙ্গলেও আশ্রয় পাচ্ছে না, বললেন জামায়াত আমির।


বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, "আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপি এবং তাদের সহযোগীরা এত কুকর্ম করেছে যে তারা এখন বন-জঙ্গলেও আশ্রয় পাচ্ছে না। খালে-বিলে লুকিয়েও তারা রেহাই পাচ্ছে না। ইতোমধ্যে তাদের অনেকের পাপের বিচার শুরু হয়ে গেছে।"


শনিবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে কুলাউড়া উপজেলায় বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন এবং দুর্গত মানুষের মধ্যে উপহারসামগ্রী বিতরণকালে তিনি এসব কথা বলেন।


এর আগে টিলাগাঁও বাজারে এক সভায় জামায়াত আমির বলেন, "চোরদের জন্য প্রতি বছর নদীর বাঁধ ভাঙছে। বিগত সময়ে বরাদ্দকৃত কোটি কোটি টাকা চোরদের পকেটে চলে যাওয়ার ফলে নদী খনন হয়নি। তাই প্রায় প্রতি বছর নদীর বাঁধ ভেঙে বন্যা হচ্ছে এবং মানুষের জানমালের ক্ষতি হচ্ছে।"

তিনি আরও বলেন, "বর্তমান বন্যার জন্য প্রতিবেশী দেশ ভারতেরও দায় রয়েছে। শুকনো মৌসুমে তারা বাঁধ দিয়ে পানি আটকে রাখে এবং বর্ষার সময় পানি ছেড়ে দিয়ে বাংলাদেশকে ভাসিয়ে দেয়। এটা আর চলতে দেয়া হবে না। প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালতে এ বিষয়ে যাওয়া হবে। কারো জমিদারি চলবে না।"


জামায়াত আমির বলেন, "১৮ কোটি মানুষের বাংলাদেশ একটি সম্প্রীতির দেশ। এখানে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ সব ধর্মের মানুষের মধ্যে সম্প্রতি রয়েছে। কোনো অপশক্তি এ সম্প্রতি বিনষ্ট করতে পারবে না।"


তিনি বলেন, "সংখ্যাগুরু, সংখ্যালঘু বলে জাতিকে বিভক্ত করা যাবে না। আমরা সবাই মিলে এ দেশটাকে নতুন করে গড়ে তুলব।"


জামায়াত আমির আরও বলেন, "আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপি ও তাদের সহযোগীরা এত কুকর্ম করেছে যে তারা বন-জঙ্গলেও আশ্রয় পাচ্ছে না। খালে-বিলে লুকিয়েও রেহাই পাচ্ছে না। ইতোমধ্যে তাদের অনেকের পাপের বিচার শুরু হয়েছে এবং ভবিষ্যতে আরও হবে।"


তিনি দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, "৫ আগস্ট জালিম সরকার বিদায় নিয়েছে। আমরা এখন দেশটাকে গঠন করব এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সহযোগিতা করব। ছাত্রলীগ ও পুলিশ অতীতে যা করেছে, তার জন্য তারা শিক্ষা পাচ্ছে। আমাদের ১১ জন নেতাকে হত্যা করেছে এবং দলের নেতৃবৃন্দের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, বাসা-বাড়ি লুটপাট করেছে ও বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দিয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর ওপর সবচেয়ে বেশি নিপীড়ন চালিয়েছিল জালিম আওয়ামী সরকার। তাদের পতনও হয়েছে সেভাবে। তারপরও আপনারা কোনো প্রতিশোধ-প্রতিহিংসা করবেন না। এক জুলুমতন্ত্রের পরে আরেক জুলুমতন্ত্র চাই না।"


তিনি বলেন, "আমার জন্মভূমি কুলাউড়া আজ ভালো নেই। সবকিছু পানির নিচে। মৃত মানুষের দাফনের জায়গাও নেই। সবদিকে পানি আর পানি।"

ff f

তিনি আরও জানান, বিভিন্ন স্থানে কোটাবিরোধী আন্দোলনে শহীদদের পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানাতে বিভিন্ন এলাকা ভ্রমণ এবং ঢাকায় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সঙ্গে বৈঠকের কারণে কুলাউড়ায় বন্যাদুর্গতদের মাঝে দেরিতে আসায় তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।


টিলাগাঁও বাজারে দুপুর ১টায় কুলাউড়া উপজেলা জামায়াতের আমির মো. আব্দুল হামিদ খানের সভাপতিত্বে এবং উপজেলা জামায়াতের যুগ্ম সম্পাদক সাইফুল ইসলাম খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, জামায়াতের মৌলভীবাজার জেলা নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রহমান, জেলা সহ-সেক্রেটারি আলাউদ্দিন শাহ, মৌলভীবাজার পৌর জামায়াতের আমির তাজুল ইসলাম, কুলাউড়া উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক আব্দুল মোন্তাকিম, ছাত্রশিবিরের জেলা সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ সুমন, জেলা সেক্রেটারি নিজাম উদ্দিন, সাবেক জেলা ছাত্রশিবির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক সভাপতি আলাউদ্দিন, পৌর সভাপতি রুহুল আমিন এবং সেক্রেটারি মনসুর আহমদ প্রমুখ।

Post a Comment

0 Comments