এস আলম তখন কার এখন কার?

এস আলম তখন কার এখন কার?


 উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, এস আলম গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, যিনি মাসুদ নামেও পরিচিত। প্রতিষ্ঠানটির সদর দপ্তর চট্টগ্রামের আছদগঞ্জে অবস্থিত এবং তিনি এর চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার কর্মী কাজ করে।


আওয়ামী লীগ সরকারের সময় এস আলমের প্রভাব অত্যন্ত শক্তিশালী ছিল। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রতিবেদন প্রকাশ পেলেও বিভিন্ন সময়ে নির্বাহী এবং বিচার বিভাগ নানা কৌশল অবলম্বন করে তাঁকে রক্ষা করেছে। ২০২৩ সালে ডেইলি স্টার-এর এক অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে যে এস আলম ও তাঁর স্ত্রী সিঙ্গাপুরে প্রায় এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ব্যবসা গড়ে তুলেছেন, যদিও এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কোনো অনুমতি নেননি। আদালত এই অর্থ পাচার সংক্রান্ত তদন্ত বন্ধ করার আদেশ দিয়েছিল, এবং এমনকি এস আলমের পক্ষে প্রতিবেদন বন্ধের জন্য আদালতে রিটও করা হয়েছিল।

ff f

আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের মধ্যে এস আলম ছিলেন শীর্ষে। তবে ক্ষমতার পরিবর্তনের পর তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন আর্থিক অনিয়মের খবর বের হতে শুরু করে। তাঁর গ্রুপ আটটি ব্যাংকের মালিকানা দখলে রাখলেও, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে এসব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে।


অনেকেই মনে করেছিলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে এস আলমের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে। কিন্তু দেখা গেছে, বিএনপির কয়েকজন নেতার সঙ্গে এস আলমের সুসম্পর্ক রয়েছে। একটি সংবাদ প্রতিবেদনে দেখা যায়, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ এস আলমের মালিকানাধীন একটি গাড়িতে চড়ে কক্সবাজারে একটি সংবর্ধনায় যান। যদিও এই বিষয়ে তিনি পরে দুঃখ প্রকাশ করেন, তবুও তাঁকে শোকজ করা হয়।


এস আলমের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের সম্পর্ক নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নানা গুঞ্জন রয়েছে। ২০১৫ সালে সালাহউদ্দিনের আত্মগোপনের সময় তিনি এস আলমের একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপকের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ক্ষমতা পরিবর্তনের পর এস আলমের সহযোগিতায় বিএনপির নেতাদের সম্পৃক্ততা সম্পর্কে আরও তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।

f ff

সম্প্রতি এস আলমের মালিকানাধীন পাওয়ার প্ল্যান্টের নামেও কয়েকটি গাড়ি নিবন্ধন করার বিষয়টি উঠে এসেছে। এই ধরনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি তাদের চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত করেছে।


এস আলম ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে সিআইডি তদন্ত শুরু করেছে। এ অভিযোগে বলা হয়েছে, এস আলম গ্রুপ বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বিদেশে সম্পদ গড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক তাঁর সম্পত্তি বিক্রি করে ঋণ আদায়ের চেষ্টা করলেও সম্পদের পরিমাণ ঋণের তুলনায় কম।


আশির দশকে ব্যবসা শুরু করা এস আলম গ্রুপ সব সময়ই সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে তাঁর মামার সূত্র ধরে তিনি সরকারের উচ্চপর্যায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ান এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দখল করেন। ক্ষমতার পরিবর্তনের পর এস আলম বিএনপির নেতাদের সঙ্গেও সুসম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন।

Post a Comment

0 Comments