"গুম অবস্থায় আল্লাহর কাছে কাঁদতাম, যেন লাশটা কুকুরের খোরাক না হয়।"

"গুম অবস্থায় আল্লাহর কাছে কাঁদতাম, যেন লাশটা কুকুরের খোরাক না হয়।"


 জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আজমের ছেলে এবং সেনাবাহিনীর সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আযমী আট বছর গুম থাকার করুণ অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি বলেন, গুম অবস্থায় প্রায়ই মনে হতো, তারা হয়তো আমাকে ক্রসফায়ারে হত্যা করবে। প্রতিদিন রাতে তাহাজ্জুদ পড়ে আল্লাহর কাছে কাঁদতাম যেন আমার লাশটা কুকুরের খাদ্যে পরিণত না হয় এবং যেন তা আমার পরিবারের কাছে পৌঁছায়।

m mm

গত মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে তিনি বারবার কেঁদে ফেলেন। যদিও তিনি সশরীরে উপস্থিত ছিলেন না, বরং অনলাইনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন।

আবদুল্লাহিল আমান আযমী আরও জানান, যখন তার বাড়িতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আসে, তিনি তাদের পরিচয় জানতে চান এবং কোনও গ্রেফতারি পরোয়ানা আছে কি না, তা জানতে চান। কিন্তু তারা কোনও উত্তর না দিয়ে তাকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে যায়। এরপর তাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় একটি অন্ধকার ঘরে আটকে রাখা হয়, যেখানে দিন আর রাতের কোনো পার্থক্য বুঝতে পারা যেত না। টয়লেটে যাওয়ার সময়ও চোখ ও হাত বাঁধা অবস্থায় তাকে নিয়ে যাওয়া হতো।

m mm

তিনি আরও বলেন, আট বছর বন্দী অবস্থায় তিনি পৃথিবীর আলো, আকাশ, কিংবা সূর্যের মুখ দেখেননি। প্রতিটি রাত কাটতো ক্রসফায়ারের আতঙ্কে। বন্দী অবস্থায় তার উপর অমানবিক আচরণ করা হয়, যার ফলে তিনি রাতের পর রাত কান্নায় সময় কাটাতেন। চোখ এমনভাবে বাঁধা থাকতো, যেন মনে হতো চোখের মণি ফেটে যাবে। হাতকড়া পরা অবস্থায় হাতে ক্ষত হয়ে যেত। এই সময়ে তিনি অন্ধকার ঘরে বন্দী ছিলেন, পৃথিবীর কোনো কিছুই দেখতে পাননি।

তিনি আরও জানান, মুক্তির পর জানতে পারেন তার পরিবারের উপরও অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। তার স্ত্রীর উপর হাত তোলার চেষ্টা করা হয় এবং বাড়ির যুবতী কাজের মেয়ের উপরও হামলা চালানো হয়। বাড়ির ম্যানেজার এবং দারোয়ানসহ অন্যান্য সদস্যদের উপরও হামলা চালানো হয়।

mm m

গত ৬ আগস্ট, 'আয়নাঘর' থেকে মুক্তি পান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির মরহুম গোলাম আজমের মেজো ছেলে, সেনাবাহিনীর সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আযমী।

Post a Comment

0 Comments