ইসলামী ব্যাংকে বৈষম্য দূর করার দাবি জানিয়েছেন পেশাদার ব্যাংকাররা।
ফ্যাসিস্ট সরকারের সমর্থনে এস আলম ইসলামী ব্যাংকে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার পর থেকে বহু কর্মকর্তা-কর্মচারী বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। অনেককে অন্যায়ভাবে পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে, একইসাথে দলীয় পরিচয়ে নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের রাতারাতি পদোন্নতি দিয়ে ব্যাংকে একটি লুটেরা গোষ্ঠী তৈরি করা হয়েছে, যারা কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে।
এস আলমের তৈরি করা এই বৈষম্য দূর করার দাবি জানাচ্ছেন অন্যায়ভাবে পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত পেশাদার ব্যাংকাররা। ২০১৭ সালের ৬ জানুয়ারি হোটেল রেডিসনে আনুষ্ঠানিকভাবে এস আলম ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেন, যদিও ২০১৬ সালেই তিনি ব্যাংকটিতে নিজের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তখন থেকেই নিজস্ব লোক নিয়োগ দিয়ে মদতপুষ্ট একটি গোষ্ঠী তৈরি করেন এবং তাদের রাতারাতি পদোন্নতি দিয়ে ব্যাংক লুটে সুবিধা দেন।
যোগ্য ও মেধাবী ব্যাংকারদের উপেক্ষা করে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে হাজার হাজার কর্মী নিয়োগ দেন, যারা ২০১৬ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ৩-৪ বার বা তারও বেশি বিশেষ পদোন্নতি পেয়েছেন। এদেরকে প্রধান কার্যালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পদায়ন করা হয়েছে, যাতে নির্বিঘ্নে লুটপাট ও টাকা পাচার সম্ভব হয়।
অন্যদিকে, অসংখ্য যোগ্য ও মেধাবী ব্যাংকারদের অন্যায়ভাবে পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে বা কেউ বড়জোর একটি পদোন্নতি পেয়েছেন। এস আলমের অধীনে ব্যাংকটি একসময় দেশের সেরা ব্যাংক ছিল, কিন্তু লুটপাটের কারণে এর গৌরব হারাতে বসেছিল।
গত ৫ আগস্টের বিজয়ের পর বৈষম্যের শিকার ব্যাংকাররা নতুন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের কাছে বৈষম্য দূর করার যৌক্তিক দাবি জানান। তবে, এস আলমের সুবিধাভোগী যারা একাধিক পদোন্নতি পেয়েছেন, তারা নতুন কর্তৃপক্ষকেও বিভ্রান্ত করে আবারও পদোন্নতির সুযোগ নিয়ে নিচ্ছেন, যা কর্তৃপক্ষের জন্য বিব্রতকর।
f
ff
বৈষম্যের শিকার ব্যাংকারদের পাঁচটি প্রধান দাবি ছিল, কিন্তু সুবিধাভোগীদের কারণে শুধু পদোন্নতির বৈষম্য দূর করার দাবিই প্রাধান্য পেয়েছে। একটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি ছিল, ব্যাংকিং ডিপ্লোমা ডিগ্রি নিয়ে। ২০২৪ সালের জানুয়ারির আগে এই ডিগ্রি কখনো পদোন্নতির জন্য বাধ্যতামূলক ছিল না। তবে ১ জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সার্কুলারের মাধ্যমে এটি বাধ্যতামূলক করা হয়, যা অনেক পেশাদার ব্যাংকারদের মতে, লুটেরাদের সুবিধার্থে করা হয়েছিল। তাদের দাবি, এই বিতর্কিত সার্কুলার ও বৈষম্যই লুটেরাদের অসৎ উদ্দেশ্য সফল করেছে। পেশাদার ব্যাংকাররা ডিপ্লোমা ডিগ্রির পক্ষে থাকলেও, তারা পদোন্নতির জন্য এই ডিগ্রি বাধ্যতামূলক করার পক্ষে নন।
0 Comments