**"পঞ্চপান্ডবেই সর্বনাশ!"**

 **"পঞ্চপান্ডবেই সর্বনাশ!"**


 ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আওয়ামী লীগ এখন দেশের রাজনীতিতে অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। প্রায় দেড় দশক টানা ক্ষমতায় থাকা দলটির সাংগঠনিক দুর্বলতা এখন আবার প্রকাশ্যে আসছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার পরে দলের মূল নেতৃত্বের দায়িত্ব পালন করেছেন পাঁচ নেতা, যাদের 'পঞ্চপান্ডব' নামে অভিহিত করা হয়। দলীয় নেতাকর্মীদের মতে, এই পঞ্চপান্ডবের কারণেই আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়েছে এবং দলটির বিনাশ ঘটেছে।

এই পাঁচ নেতা হলেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ এবং প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের ক্ষমতাচ্যুতি ও প্রবল গণ-আন্দোলনের পর অন্তত দুই ডজন নেতাকর্মীর দাবি, পঞ্চপান্ডবের কারণে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটেছে। তারা দলীয় পদে নিয়োগ, মনোনয়ন ও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিয়ে নিয়েছিলেন, যার ফলে দলের মধ্যে বিভক্তি ও অনাস্থার জন্ম হয়।

mmm

এদের মধ্যে ওবায়দুল কাদের ছাড়া বাকিদের মাঠের রাজনীতিতে তেমন অবদান নেই। হাছান মাহমুদ বিদেশ থেকে ফিরে ২০০৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। অন্যদিকে বিপ্লব বড়ুয়া, সেলিম মাহমুদ ও আবদুস সোবহান গোলাপ দলীয় আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন না। বিপ্লব বড়ুয়া এবং সেলিম মাহমুদ প্রয়াত এইচ টি ইমামের মাধ্যমে আওয়ামী লীগে স্থান করে নেন এবং সামরিক সচিব জয়নুল আবেদীনের সহযোগিতায় ক্ষমতাবান হন। গোলাপ যুক্তরাজ্যে থাকার সময় শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ হন।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, পঞ্চপান্ডব নিজেদের অনুসারীদের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় কমিটিতে প্রভাবশালী পদে নিয়োগ করেন। তারা আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাদের সরিয়ে দিয়ে অনুপ্রবেশকারীদের সমর্থন নিয়ে নিজেদের শক্তি বৃদ্ধি করেন। পঞ্চপান্ডবের আধিপত্যের কারণে দলের শীর্ষ নেতাদেরও সঠিকভাবে মতামত দেওয়ার সুযোগ হয়নি।

এছাড়া, পঞ্চপান্ডব শেখ হাসিনার চারপাশে এমন একটি বলয় তৈরি করেছিলেন যে অন্য নেতাদের সঙ্গে তার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। দলের মধ্যে যে কোনো সিদ্ধান্ত তাদের মাধ্যমে নেওয়া হতো, যার ফলে দলের ঐক্য বিনষ্ট হয়।

m mm

দলীয় নেতাদের একাংশ মনে করেন, পঞ্চপান্ডবের ক্ষমতার অপব্যবহার এবং নিজেদের অনুসারীদের প্রাধান্য দেওয়ার ফলে দলের অভ্যন্তরে অসন্তোষ ও বিভক্তির সৃষ্টি হয়েছে, যা বর্তমানে দলের সাংগঠনিক সংকটের মূল কারণ।

Post a Comment

0 Comments