রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদক হল থেকে বিতাড়িত হয়েছেন। তাদের রুম থেকে মাদক ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

 রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদক হল থেকে বিতাড়িত হয়েছেন। তাদের রুম থেকে মাদক ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।


সারাদেশে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছেন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, মতিহার হল ও মাদারবক্স হলে ছাত্রলীগের রুমে হামলা চালায়।


এসময় তারা রাবি ছাত্রলীগ সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবের কক্ষ থেকে বিপুল পরিমাণ মাদক, দেশীয় অস্ত্র ও পিস্তল উদ্ধার করেন। এছাড়াও ছাত্রলীগের অন্তত ৩০টি মোটরসাইকেলে আগুন দেয়া হয়। ক্যাম্পাসে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।


মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিকেল আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংলগ্ন বিনোদপুর বাজার থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়। শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ নিয়ে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করেন। এতে সংহতি জানিয়ে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) ও রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থীরাও যোগ দেন। প্রায় ১৫ হাজার শিক্ষার্থী এতে অংশ নেন।


এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রণে ছিল। তারা প্রতিটি হলের মেইন গেটে তালা লাগিয়ে শিক্ষার্থীদের আটকে রেখেছিল যাতে তারা আন্দোলনে অংশ নিতে না পারে। তবে শিক্ষার্থীরা বিনোদপুর থেকে মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাস থেকে পালিয়ে যান। পরে শিক্ষার্থীরা হলের তালা ভেঙে বিক্ষোভে যোগ দেন, ছাত্রীরাও এতে অংশ নেন। বিক্ষোভের সময় শিক্ষার্থীদের হাতে লাঠিসোটা দেখা গেছে।

পুরো ক্যাম্পাস কোটা আন্দোলনকারীদের দখলে চলে আসে এবং তারা নানা স্লোগানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোড প্রকম্পিত করে। কোটা সংস্কারের পক্ষে ও হামলাকারীদের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন তারা।


পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে দ্বিতীয় দফায় ভাঙচুর শুরু হয়। এসময় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের রুম থেকে মাদক, দেশীয় অস্ত্র ও দুটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। এবং প্রায় ৩০টি মোটর বাইকে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। পরে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মেইন গেটে অবস্থান নেন।


আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী বলেন, "ঢাবি, জাবি, চবিসহ সারাদেশে আমার ভাইদের গায়ের রক্ত ঝরিয়েছে কুলাঙ্গার ছাত্রলীগ। আজ আসুক দেখি তাদের কত বুকের পাটা। এই দেশ মেধাবীদের, কোনো কোটাধারীদের না। ১৯৭১ সালে দেশকে স্বাধীন করেও প্রকৃত মেধাবীরা আজও পরাধীন। তাই নতুন করে দেশকে স্বাধীন করেই ছাড়ব।"


বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক জানান, "আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। ক্যাম্পাস শান্ত রাখার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের সাথেও কথা বলছি; তাদের নিরাপত্তার ব্যাপারে সতর্ক অবস্থানে রয়েছি।"


বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, "আন্দোলনকারীরা বঙ্গবন্ধু হলের নিচতলায় আগুন দিয়েছে। আমরা ক্যাম্পাস শান্ত করার চেষ্টা করছি।"

Post a Comment

0 Comments