হেফাজত থেকে মুক্ত হয়ে যা বললেন সারজিস আলম

 হেফাজত থেকে মুক্ত হয়ে যা বললেন সারজিস আলম

গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে হেফাজত থেকে মুক্ত হওয়ার পর কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম ফেসবুকে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। নিজের ফেসবুক পেজে তিনি আন্দোলন নিয়ে তার অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘আপনারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের থেকে কাউকে গ্রেপ্তার করবেন না, মামলা দিয়ে হয়রানি করবেন না। কিন্তু আপনারা কথা রাখেননি।

আপনারা আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপর হামলা করেছেন। সারা দেশে আমার স্কুল কলেজের ভাইবোনদের উপর লাঠিচার্জ করেছেন। যাকে ইচ্ছা তাকে জেলে পাঠিয়েছেন। আন্দোলনকারীকে না পেলে বাসা থেকে ভাইকে তুলে নিয়েছেন, বাবাকে হুমকি দিয়েছেন। মাশরুর তার উদাহরণ।

যারা একবারের জন্যও এই আন্দোলনে এসেছে তারা শান্তিতে ঘুমাতে পারে না, গ্রেপ্তারের ভয়ে থাকে। এমন অনেকেই আছে যাদের পরিবার এখনো তাদের খোঁজ পায়নি। এমনটা হওয়া উচিৎ ছিল না!



কোথায় মহাখালীর সেতু ভবন আর কোথায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়! অথচ আপনারা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক আরিফ সোহেলকে মহাখালীর সেতুভবনে হামলার অভিযোগে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়েছেন। সাথে ছিলেন আসিফ মাহতাব স্যার, মাশরুরসহ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অসংখ্য শিক্ষার্থী।

রিকশা থেকে নামিয়ে প্রিজন ভ্যানে তুলেছেন, বাসা থেকে তুলে নিয়ে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন।

আমার বোনদের রাস্তায় ফেলে পিটিয়েছেন। কি ভাবছেন? এভাবেই সবকিছু শেষ হয়ে যাবে?
৬ দিনের ডিবি হেফাজতে ৬ জনকে আটক রাখা যায় কিন্তু এই বাংলাদেশের পুরো তরুণ প্রজন্মকে কিভাবে আটকে রাখবেন? দুর্নীতি, লুটপাট, অর্থ পাচার, ক্ষমতার অপব্যবহার করে যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছেন প্রতিনিয়ত সেগুলো কিভাবে নিবৃত করবেন?

পুলিশ ভাইদের উদ্দেশ্যে একটা বলি, এ দেশের মানুষের ক্ষোভ আপনাদের উপর নয়, পুলিশের উপর নয়। এই ক্ষোভ আপনার গায়ের পোশাকটার উপর। যে পোশাকটাকে ব্যবহার করে বছরের পর বছর আপনাদের দিয়ে এ দেশের অসংখ্য মানুষকে দমন-পীড়ন করা হয়েছে, অত্যাচার-নির্যাতন করা হয়েছে, জেল আর আদালতের প্রাঙ্গণে চক্কর কাটানো হয়েছে, সেই পোশাকটার উপর। ওই পোশাকটা ছেড়ে আসুন আমাদের সাথে, বুকে টেনে নিব।

এ পথ যেহেতু সত্যের পথ, ন্যায়ের পথ, তাই যেকোনো কিছু মোকাবেলা করতে আমরা বিন্দুমাত্র বিচলিত নই। যতদিন না এ বাংলাদেশ আন্দোলনকারীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠছে; গণগ্রেপ্তার, জুলুম, নির্যাতন বন্ধ হচ্ছে; ততদিন এ লড়াই চলবে।


Post a Comment

0 Comments