বিপাকে আওয়ামী লীগের পলাতক নেতাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান

 বিপাকে আওয়ামী লীগের পলাতক নেতাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান


আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের বিভিন্ন ব্যবসায় জড়িত ছিলেন। কিন্তু ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এদের ব্যবসা কঠিন সংকটে পড়েছে। আন্দোলনের গতি এবং সরকারের পতনের সম্ভাবনা বুঝতে পেরে অনেকে আগেই দেশ ছেড়ে চলে যান, আবার কেউ কেউ সরকার পতনের পর পালিয়ে যান। যারা দেশে থেকে গেছেন, তারা আত্মগোপনে আছেন। ফলে আওয়ামী লীগ নেতাদের মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে।

খাতসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দলটির সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠানে হামলা, লুটপাট হয়েছে, এমনকি কিছু প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বহু শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। এছাড়া এই প্রতিষ্ঠানগুলোর নেওয়া ঋণ ব্যবসায়িক কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার কারণে পরিশোধে সমস্যা দেখা দিচ্ছে, যা দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।


ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম সরকারের পতনের পরেও দেশে ছিলেন, কিন্তু উত্তেজনা বাড়ার পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান। আতিকুল ইসলাম তৈরি পোশাক খাতে ১৯৮৫ সাল থেকে ব্যবসা করছেন এবং তার মালিকানাধীন ১৬টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যা বর্তমানে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।


গোলাম দস্তগীর গাজীর মালিকানাধীন গাজী টায়ার্সের কারখানায় সরকারের পতনের পর লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে, যার ফলে প্রতিষ্ঠানটি ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির এক কর্মকর্তা জানান, কারখানার মেশিনসহ মূল্যবান সরঞ্জাম লুট হয়ে গেছে, এবং ক্ষতিগ্রস্ত কারখানা দ্রুত চালু না হলে প্রায় আড়াই হাজার শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়বেন।


আওয়ামী লীগের আরেক নেতা এসএম মান্নান কচি, যিনি বিজিএমইএর সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন, তিনি সরকারের পতনের পর দেশে ফেরেননি। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সেহা ডিজাইন (বিডি) লিমিটেড বর্তমানে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

fff

নির্মাণ খাতেও আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা ব্যাপকভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে রড, সিমেন্টের মতো নির্মাণ সামগ্রীর চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। চাহিদা কমে যাওয়ার কারণে রডের দামও কমে গেছে। একইভাবে সিমেন্ট খাতেও চাহিদা প্রায় ২০-৩০ শতাংশ কমে গেছে, যার ফলে এই খাতের ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন।


সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার মন্তব্য করেছেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান সম্ভাবনার নতুন দরজা খুলেছে, তবে সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে যাতে এই সম্ভাবনা নষ্ট না হয়।

Post a Comment

0 Comments