"এ কেমন বন্ধু ভারত, প্রশ্ন তুলেছেন আমীরে জামায়াত।"
বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, "আমাদের প্রতিবেশী একটি দেশ শুকনা মৌসুমে পানি আটকিয়ে রাখে, আর বর্ষাকালে সব গেট খুলে দেয়। এ কেমন বন্ধু ভারত?"
বুধবার (২২ আগস্ট) দুপুরে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চর পোড়াগাছা ইউনিয়নের শেখের কেল্লা এলাকায় পানিবন্দী দুর্গত বাসিন্দাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।
জামায়াতের আমির বলেন, "আমরা সবসময় শুনে আসছি, প্রতিবেশী ওই দেশ আমাদের সবচেয়ে বড় বন্ধু। কিন্তু গ্রীষ্মকালে যখন পানির প্রয়োজন, তখন তারা আমাদের পিপাসার্ত করে দেয়, আর বর্ষায় সব পানি ছেড়ে দেয়। এতে আমরা অবাক।"
ডা. শফিকুর রহমান আরো বলেন, "আমাদের একটা সরকার ছিল সাড়ে ১৫ বছর। তারা বলতো, আমাদের দেশকে সিঙ্গাপুর বানিয়ে ছাড়বে। এখন এই হলো সিঙ্গাপুরের দৃশ্য। তারা বলতো, এটা কানাডা। এখন এই হলো কানাডার দৃশ্য। এগুলো সব মিথ্যা ছিল। তারা জনগণের সব অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। মানুষ যদি নিজের ঘরে একটা পর্দা টানাতো, তারা বলত সেই ঘরে জঙ্গি আছে। তাদের মাথায় সবসময় জঙ্গি ভাবনা ছিল। আসল জঙ্গি তারা। তারা হেলমেট পরে, হাতে মুগুর নিয়ে মানুষের ওপর আক্রমণ চালাতো। এরা আসল জঙ্গি।"
তিনি আরো বলেন, "আমাদের ছাত্র, তরুণ, যুব সমাজ বুক পেতে দিয়ে, বুকের মধ্যে গুলি নিয়ে তাদেরকে তাড়িয়েছে বাংলার মাটি থেকে। কিন্তু এক শাসক সাড়ে ১৫ বছর দেশ শাসন করে, তারপরও তাকে পালাতে হলো কেন? তারা বলত, আমাদেরকে উন্নয়নের মহাসড়কে তুলেছে।"
ff f
জামায়াতের এই নেতা বলেন, "আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করি, আল্লাহ আমাদের থেকে জালিম বিদায় করেছেন। চিরতরে যেন এই জালিম বিদায় নেয় এবং আর কোনো জালিমের আগমন না ঘটে। দেশ যেন সুবিচারের ওপর প্রতিষ্ঠিত হয় এবং প্রতিটি মা-বোন, ভাই সন্মানের সাথে বসবাস করতে পারে। ইজ্জত, দ্বীন, ইমান এবং ধর্ম নিয়ে শান্তিতে বেঁচে থাকতে পারে।"
তিনি আরো বলেন, "প্রত্যেক ধর্মের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করবে এবং কেউ কাউকে বাধা দেবে না। তবে দুঃখের বিষয়, বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ মুসলমান হলেও, এখানে মুসলমানরা সংখ্যালঘু হিসেবে আচরণ করছে। অন্যান্য ধর্মের মানুষ তাদের ধর্মীয় রীতি মেনে চলে, এতে বাধা নেই। কিন্তু একজন খতিবকে মিম্বরে দাঁড়িয়ে তার ইচ্ছামতো বক্তব্য দিতে দেওয়া হয় না। ওয়াজ মাহফিলের মাইক কেড়ে নেওয়া হয়, তফসির মাহফিলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হয়, ১৪৪ ধারা জারি করা হয়, এবং পুলিশ পাঠিয়ে ওয়াজ-মাহফিল বন্ধ করে দেওয়া হয়। বাংলার মানুষ আর ভবিষ্যতে তা হতে দেবে না। ১৮ কোটি মানুষ ৩৬ কোটি হাতে হাত রেখে বাংলাদেশকে শান্তি, সমৃদ্ধি এবং অগ্রগতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। এ জন্য আপনাদের দোয়া, সাহায্য ও ভালোবাসা চাই।"
শেষে দুর্যোগ থেকে রক্ষার জন্য দোয়া করেন জামায়াতের এই নেতা।
ff f
ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা দ্বীন মোহাম্মদ, সহ সেক্রেটারি মাওলানা এ টি এম মা'ছুম, জেলা জামায়াতের আমির রুহুল আমিন ভূঁইয়া, নায়েবে আমির এ আর হাফিজ উল্যা, সেক্রেটারি ফারুক হোসেন নুরনবী, সহ সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট নাছির উদ্দিন মাহমুদ, জেলা সহকারী সেক্রেটারি ও জেলা প্রচার সম্পাদক মহসিন কবির মুরাদ, সরদার সৈয়দ আহমদ, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক আবদুর রহমান, শহর আমির আবু ফারাহ নিশান, শিবিরের শহর সভাপতি আরমান পাটওয়ারী, সেক্রেটারি ফরিদ উদ্দিন প্রমুখ।

0 Comments