এস আলম মুক্ত ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার দর ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

 এস আলম মুক্ত ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার দর ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।


পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের প্রতিষ্ঠান ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার দর গত ১৪ কার্যদিবসে ৩৫.৫৮ শতাংশ বেড়েছে। ব্যাংকটি দীর্ঘ সময় ধরে চট্টগ্রামভিত্তিক এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে ছিল, এবং এই সময়ে বেসরকারি ব্যাংক থেকে গ্রুপটি ৭৫ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ লোপাট করেছে।


সম্প্রতি ছাত্র আন্দোলনের ফলে ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করেন। তার পরদিন থেকেই "এস আলম মুক্ত ব্যাংক" এর দাবিতে ইসলামী ব্যাংকের সামনে সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তারা আন্দোলন শুরু করেন, যার মধ্যে একদিন গোলাগুলির ঘটনাও ঘটে। এরপর থেকে এস আলম সংশ্লিষ্টরা ব্যাংকে প্রবেশ করতে পারেনি।


২২ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংক ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে পাঁচজন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়ে নতুন পর্ষদ গঠন করে। নতুন পর্ষদে ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেন রূপালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ। 


এর ফলে সাত বছর পর দেশের সবচেয়ে বড় বেসরকারি ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ হারায় এস আলম গ্রুপ। ইসলামী ব্যাংকে তাদের একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল এই সময়কালে। এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ হারানোর পর থেকে ব্যাংকের শেয়ার দর ৩৫ শতাংশের বেশি বেড়েছে। ৬ আগস্ট ব্যাংকটির শেয়ার দর ছিল ৩২ টাকা ৬০ পয়সা, যা এখন ৪৪ টাকা ২০ পয়সায় পৌঁছেছে।


সূত্রে জানা গেছে, ইসলামী ব্যাংকের ৮২ শতাংশ শেয়ার এস আলম গ্রুপের নামে-বেনামে ২৪ ব্যক্তি ও কোম্পানি অধিকার করে রেখেছিল। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে, তারা এসব শেয়ার বিক্রি করে অর্থ লুটের পরিকল্পনা করেছিল।

এমন পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম এবং তার পরিবারের ২৫ সদস্যের শেয়ার বিক্রি ও হস্তান্তরের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। 


বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, "নামে-বেনামে নেওয়া ঋণের টাকা পরিশোধ না করা পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংকে এস আলমের সব শেয়ার সরকারের জিম্মায় থাকবে।"


এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণাধীন সময়ে, ইসলামী ব্যাংক থেকে তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ শেয়ার ও ঋণ নিয়েছিল। ২০১৭ সালে এস আলম গ্রুপ 'জোরজবরদস্তি' করে ইসলামী ব্যাংকের কর্তৃত্ব নেয় এবং তারপর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ বের করে নেয়, যা ব্যাংকটির অবনতি ঘটায়। গ্রুপটি ইসলামী ব্যাংক থেকে ৭৫ হাজার কোটি টাকা বের করে নেয়, যার মধ্যে খাতুনগঞ্জ শাখা থেকেই ৬৭ হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়।

Post a Comment

0 Comments