শেখ হাসিনা পালিয়ে আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করে গেলেন
এম সাখাওয়াত হোসেন
দেশে আজ যা ঘটছে, তা একটি অপরিহার্য বাস্তবতা। গণ-অভ্যুত্থান কখনো থামানো যায় না। শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন সহজেই সমাধান করা যেতে পারত, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জেদের কারণে এত মানুষ প্রাণ হারালেন।
গণমাধ্যমে প্রাণহানির যে চিত্র উঠে এসেছে, বাস্তবে তা আরও বড়। কত মরদেহ কোথায় পড়ে আছে, কত গণকবর হয়েছে, কত নিরীহ মানুষের জীবন ঝরেছে—এই প্রশ্নের উত্তর কে দেবে? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলে গেছেন; এখন এর জবাব দেবে কে?
পঁইত্রিশ বছর ধরে মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করা হয়েছে। দিনের পর দিন ভোট চুরি হয়েছে। দীর্ঘ সময়ের জমে থাকা ক্ষোভ এখন প্রকাশ পেয়েছে। শেখ হাসিনার বোঝা উচিত ছিল, তিনি ও তাঁর দল জনগণের কাছে কতটা অজনপ্রিয়। এই প্রাণহানির দায় কে নেবে? দেশে সুশাসনের মারাত্মক অভাব দেখা দিয়েছে, যা তিনি নিশ্চিত করতে পারেননি।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর হাজার হাজার গুলি ছোড়া হয়েছে, এমনকি হেলিকপ্টার থেকেও গুলি করা হয়েছে।
পূর্বে আমরা এইচ এম এরশাদকে স্বৈরাচার বলেছি, তখন মাত্র ছয়জনের প্রাণহানির কারণে। কিন্তু গত ১৫ বছরে কত মানুষের মৃত্যু হয়েছে, তা হিসাব করে দেখুন।
২০০৯ সালে পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা নিহত হয়েছিলেন। এর জন্য দায়ী কে?
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের সদস্যদের এতো করুণ পরিণতি কেন হবে? এটি তাঁর অহঙ্কার ও দম্ভের ফল।
প্রধানমন্ত্রীকে আমি বারবার বলেছি, দেশে সুশাসন নিশ্চিত করতে। নানা সভা-সেমিনারে এসব বিষয় তুলে ধরেছি। কিন্তু তখন আমাদের ভিন্ন মতের লোক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। গণভবন লুটপাট ও ভাঙচুরের জন্য জনগণকে দোষারোপ করবেন কীভাবে?
শ্রীলঙ্কা, তিউনিসিয়া কিংবা মিসরের জনগণের প্রতিবাদ থেকে শেখ হাসিনার সরকার শিক্ষা নেয়নি। জনগণের সরকার না হলে এমন পরিণতি হয়।
এরশাদের তুলনায় শেখ হাসিনা শত গুণ বেশি দুর্বৃত্ত হয়ে বিদায় নিয়েছেন। এরশাদ পালিয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন এবং আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করে গেছেন। তাঁর অহংকার, দম্ভ এবং হিংসা দলটাকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছে।
0 Comments