"ময়নাতদন্ত ছাড়া অনেক মরদেহ দাফন, মৃত্যুর কারণ অজানা থেকে যাওয়ার আশঙ্কা"

 "ময়নাতদন্ত ছাড়া অনেক মরদেহ দাফন, মৃত্যুর কারণ অজানা থেকে যাওয়ার আশঙ্কা"


বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে সংঘাত-সহিংসতাসহ যে কোনও অস্বাভাবিক মৃত্যুর ক্ষেত্রে ময়নাতদন্ত করা বাধ্যতামূলক। তবে সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনের পর সারা দেশে যে দুই শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে একটি বড় অংশকেই ময়নাতদন্ত ছাড়া দাফন করা হয়েছে।


ময়নাতদন্ত ছাড়াই কতগুলো মরদেহ দাফন করা হয়েছে, সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি। তবে বিভিন্ন হাসপাতাল ও নিহতদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে বিবিসি বাংলা অন্তত ৫৮টি মরদেহের তথ্য পেয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই পুলিশি ঝামেলা এড়াতে নিহতদের স্বজনরা সরাসরি মরদেহ বাড়িতে নিয়ে গিয়ে দাফন করেছেন।



হাসপাতালে মৃত্যু ঘটলে, পুলিশ খবর পেয়েও অনেক ক্ষেত্রে ময়নাতদন্তের প্রতি আগ্রহ দেখায়নি। যদিও পুলিশ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, পুলিশ ময়নাতদন্ত এড়িয়ে গিয়ে নিজেদের রক্ষা করার চেষ্টা করছে। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক ফারুখ ফয়সল বলেন, পুলিশের নাম জড়িত হওয়ায় তারা ময়নাতদন্ত এড়িয়ে যাচ্ছে।


এই অবস্থায় যথাসময়ে ময়নাতদন্ত না হওয়ায় অনেক নিহতের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ চাপা পড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। 


উত্তরা এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, গুলিবিদ্ধ একজন তরুণের মরদেহ হাসপাতালে আনা হয়, কিন্তু পুলিশের কেউ আসেনি। পুলিশ না আসায় মরদেহ দাফনের জন্য দাতব্য প্রতিষ্ঠান ‘আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম’-এর কাছে যোগাযোগ করা হয়, কিন্তু পুলিশি কাগজপত্র ছাড়া তারা মরদেহ দাফন করতে অস্বীকৃতি জানায়। পরবর্তীতে, থানায় আবারও যোগাযোগ করলে কর্মকর্তারা হুমকি দেয়। 


হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মরদেহের পরিচয় জানতে আশেপাশের মাদ্রাসায় খোঁজ নেয় এবং অবশেষে পরিচয় পেয়ে স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করে।

Post a Comment

0 Comments