ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান বলেন, নিচের স্তরের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এখনই কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

 ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান বলেন, নিচের স্তরের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এখনই কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ

ইসলামী ব্যাংকের সদ্য নিযুক্ত চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ জানিয়েছেন, ব্যাংকটি যেসব ঋণ বিতরণ করেছে, তার অর্ধেকের বেশি অর্থ একাই নিয়েছে সাত বছর ধরে ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণকারী ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপ। তিনি বলেন, এই ঋণের পুরো হিসাব বের করা হচ্ছে, এবং এস আলমের ঋণের বিপরীতে বন্ধক রাখা সম্পদের পুনর্মূল্যায়ন চলছে, কারণ সম্পদের দাম বাড়িয়ে ঋণ নেওয়া হয়েছে।

এছাড়া, যেসব সম্পদ বন্ধক রাখা হয়নি, সেগুলো খুঁজে বের করতে আইন মন্ত্রণালয়ের সহায়তা নেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান। ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, এসব সম্পদ খুঁজে পাওয়ার পর সেগুলো ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করা হবে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি এখন খোলামেলা কথা বলতে পারছেন বলে মন্তব্য করেন।


ইসলামী ব্যাংককে এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করার পর, আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে নতুন পরিচালনা পর্ষদের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ ব্যাংকের বর্তমান অবস্থা নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। গত ২২ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংক তাঁকে ইসলামী ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক ও চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয়। তিনি আগে সোনালী ও রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন।


তিনি আরও বলেন, "হলমার্ক কেলেঙ্কারির পর আমি সোনালী ব্যাংকের দায়িত্ব নিয়েছিলাম, এবং সেই সময়েও আমানত বাড়ানো সম্ভব হয়েছিল। তবে ইসলামী ব্যাংকের সমস্যা অনেক বড়। আমরা দায়িত্ব নিয়েই এর সমাধানে কাজ শুরু করেছি। ২০২৬-২৭ সাল হবে ঘুরে দাঁড়ানোর বছর এবং ২০২৮-৩০ হবে এগিয়ে যাওয়ার বছর।"

fff

চেয়ারম্যান জানান, ব্যাংকে ২০২২ সাল থেকে তারল্যসংকট শুরু হয় এবং গ্রাহক, প্রবাসী আয় পাঠানো ব্যক্তি, শেয়ারধারী ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ব্যাংকের ওপর আস্থা হারিয়েছেন। তাই ব্যাংকের প্রকৃত অবস্থা যাচাই করতে তিনটি নিরীক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাংকের ঋণ, বিনিয়োগ ও মানবসম্পদ নিয়ে নিরীক্ষা করবে।


অনিয়মে জড়িত কর্মকর্তাদের বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, নিচের স্তরের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এখনই কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না, তবে দোষী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে ধীরে ধীরে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ব্যাংকটির বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাংলাদেশ ব্যাংক সহায়তা করবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।

fff

২০১৭ সালে চট্টগ্রামভিত্তিক এস আলম গ্রুপ ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয়। ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ছিলেন এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলমের ছেলে আহসানুল আলম। বর্তমানে ব্যাংকটির মোট ঋণ প্রায় ১ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা, যার মধ্যে ৮৮ হাজার কোটি টাকা এস আলম গ্রুপ একাই নিয়েছে। ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, এস আলম গ্রুপের হাতে ব্যাংকের ৮২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। তবে বিএসইসি এই শেয়ার হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

Post a Comment

0 Comments