শেষ বৈঠকে হাসিনা এবং বিপুল পরিমাণ টাকা।

 শেষ বৈঠকে হাসিনা এবং বিপুল পরিমাণ টাকা।

ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগের দিনও গণভবনে বিপুল পরিমাণ টাকা ছিল, যার দায়িত্বে ছিলেন কয়েকজন কর্মকর্তা। একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র মানবজমিনকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। ৪ঠা আগস্ট রাতে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাধিক নেতা ও নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেই সময় টাকা বিলি-বণ্টনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সর্বশেষ বৈঠকটি তার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ পাঁচজন নেতা ও কর্মকর্তার সঙ্গে হয়। এর মধ্যে ছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, জুনাইদ আহমেদ পলক, মোহাম্মদ আলী আরাফাত, মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান এবং একজন লেফটেনেন্ট জেনারেল। সেই বৈঠকে হাসিনা সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে বলেন, "আর অপেক্ষা নয়, আর আপস নয়।"

বৈঠকে শেখ হাসিনা পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য নির্বিচারে গুলি চালানোর প্রস্তাব দেন। বৈঠকে আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনও উপস্থিত ছিলেন। মানবজমিন জানতে পেরেছে, বৈঠকে আইজিপি জানান যে পুলিশের পক্ষে আর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। একদিকে গুলির সংকট, অন্যদিকে জনসমাগম ক্রমাগত বাড়ছে এবং গুলি করেও জনতাকে থামানো যাচ্ছে না। যদিও এ সময় শেখ হাসিনা আইজিপির প্রশংসা করেন, পরে ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, "তোমাদের দিয়ে কিছু হবে না। আমি সেনাবাহিনীকে বলবো গুলি করতে। কারফিউ আরও কঠোর করতে হবে।" সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আগেই জানানো হয়েছিল যে তারা কোনো অবস্থাতেই গুলি চালাবে না। হাসিনা এই কথা শুনে একজন কর্মকর্তাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, "আমি তোমাদের জন্য কী না করেছি! তোমরা এখন সবাই গা বাঁচানোর চেষ্টা করছো। যা করার আমিই করবো।" হাসিনা আরও বলেন, "সেনাবাহিনী মার্শাল ল’ দিচ্ছে না কেন? তাহলেই তো পরিস্থিতি ঠাণ্ডা হয়ে যাবে।"

ff f

মানবজমিন এটাও জানতে পেরেছে যে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান আগেই জানিয়েছিলেন যে মার্শাল ল’ জারির পক্ষে তাদের সমর্থন নেই। তাদের মতে, মার্শাল ল’ দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করা সম্ভব নাও হতে পারে, এবং বিশ্ব পরিস্থিতিও মার্শাল ল’র অনুকূলে নয়। এখানেই বৈঠক শেষ হয়ে যায়। একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে যে আন্দোলনকে বিপথগামী করতে টাকা ছড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তখন গণভবনে গচ্ছিত টাকা নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের হাতে দেওয়া হয়। পরদিন শেখ হাসিনা পালিয়ে যান। সেই সময় গণভবনে লুটপাট হয় এবং লুটকারীরা টাকাও নিয়ে যায়। তবে কত কোটি টাকা ছিল তা জানা যায়নি। পঞ্চান্ন লাখ টাকা উদ্ধার করে জনতা সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেয়।

 

Post a Comment

0 Comments