ছয় বছরে ১০ হাজারের বেশি কর্মকর্তা শুদ্ধাচার পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।ff
দেশের সরকারি দপ্তরগুলোতে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল প্রবর্তন করা হয় ২০১৮ সালে। এই কৌশলের লক্ষ্য ছিল প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের পেশাগত দক্ষতা, সততা, নৈতিকতা এবং কর্মক্ষেত্রে কাজের মান উন্নয়ন। সেই সময় থেকেই সরকারের প্রতিটি দপ্তরের তিনজন কর্মকর্তাকে জাতীয় শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান করা হচ্ছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ১০ হাজারের বেশি কর্মকর্তা এই পুরস্কার পেয়েছেন।
তবে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা গেছে, ক্ষমতাসম্পর্কিত কর্মকর্তারাই বেশি অগ্রাধিকার পেয়েছেন। অনেক ক্ষেত্রে পুরস্কৃতদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং নৈতিকতাহীনতার অভিযোগ রয়েছে। যেমন, দুর্নীতির দায়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হওয়া সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ এবং চারিত্রিক পদস্খলনের দায়ে ওএসডি হওয়া আহমেদ কবীরও এই পুরস্কার পেয়েছেন। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন পুলিশ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
ff f
শুদ্ধাচার পুরস্কারের জন্য ১৮টি মানদণ্ড নির্ধারণ করা হয়েছে, যার মধ্যে পেশাগত দক্ষতা, সততা, আচরণ, এবং তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষমতা অন্তর্ভুক্ত। পুরস্কারের জন্য সর্বমোট ১০০ নম্বরের একটি স্কেল নির্ধারিত আছে, এবং ৮০ শতাংশের বেশি নম্বর পেলে পুরস্কার পাওয়ার যোগ্যতা অর্জিত হয়। তবে, অনেকেই মনে করেন যে এটি একটি ব্যক্তিকেন্দ্রিক পুরস্কারে পরিণত হয়েছে।
অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, শুদ্ধাচার পুরস্কার সঠিকভাবে না দেয়া হলে তা কর্মকর্তাদের মধ্যে অনৈতিক কাজের প্রণোদনা সৃষ্টি করে। তারা বলেন, পুরস্কারের প্রক্রিয়া সংস্কার করে যোগ্য, নৈতিক এবং দুর্নীতিমুক্ত কর্মকর্তাদেরকে পুরস্কৃত করা উচিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নাজনীন ইসলাম জানান, সৎ ও নির্লিপ্ত কর্মকর্তারা অনেক সময় পুরস্কার পান না, বরং পরিচিত এবং প্রভাবশালী কর্মকর্তারাই এই পুরস্কার লাভ করেন।
ff f
সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, পুরস্কার একটি প্রণোদনা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ, তবে কখনও কখনও পুরস্কারপ্রাপ্তদের অনৈতিক কাজে জড়িত থাকতে দেখা যায়, যা পুরস্কারের পুরো প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

0 Comments