এস আলমের গাড়িতে চড়ে এলাকায় সংবর্ধনা গ্রহণ করলেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন।
কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে সালাহউদ্দিন আহমেদের গাড়িবহর পেকুয়ায় পৌঁছানোর ভিডিও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সালাহউদ্দিন আহমেদ যে জিপে করে কক্সবাজার থেকে পেকুয়ায় আসেন, তার নম্বর ছিল চট্ট মেট্রো ঘ-১১-১৫৩৩। এটি মিতসুবিশি ব্র্যান্ডের স্টেশন ওয়াগন জিপ। ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি সামনের সিটে বসে হাত নেড়ে আশপাশের লোকজনকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চট্টগ্রাম কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সালাহউদ্দিন আহমেদ যে গাড়িটি (চট্ট মেট্রো ঘ-১১-১৫৩৩) ব্যবহার করেছিলেন, সেটি এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন এবং এটি এস আলম পাওয়ার প্ল্যান্টের নামে ২০১০ সালে নিবন্ধিত হয়। এস আলম গ্রুপের প্রধান কার্যালয় চট্টগ্রাম নগরের আছদগঞ্জে অবস্থিত এস আলম ভবনে।
বিআরটিএ চট্টগ্রামের উপপরিচালক আইনুল হুদা প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন যে, গাড়িটি এস আলম গ্রুপের নামে নিবন্ধিত।
সর্বশেষ ২০১৪ সালের ১৪ জুন কক্সবাজারে জেলা জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। ২০১৫ সালের ১০ মার্চ রাজধানীর উত্তরা থেকে নিখোঁজ হওয়ার পর ৬২ দিন পর ভারতের মেঘালয়ের শিলংয়ে স্থানীয় পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর তিনি দেশে ফেরেন।
সালাহউদ্দিন আহমেদ কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসন থেকে দুবার (১৯৯৬ ও ২০০১) সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তাঁর স্ত্রী হাসিনা আহমেদও একবার (২০০৮) সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
fff
দীর্ঘ ১০ বছরের বেশি সময় পর গত বুধবার নিজ জেলা কক্সবাজারে ফিরে আসেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। ঢাকা থেকে কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তিনি পেকুয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন এবং সেখানে তাঁকে গণসংবর্ধনা দেওয়া হয়। এর আগে তিনি চকরিয়া শহীদ আবদুল হামিদ পৌর বাস টার্মিনালে বিএনপি আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য দেন।
এস আলম গ্রুপের গাড়িতে চড়ে এলাকায় গিয়ে সংবর্ধনা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, "শত শত লোক এসেছে। কার গাড়িতে উঠেছি তা জানি না। যে চালক গাড়িটি চালিয়েছেন, তিনি সাত-আট বছর ধরে আমার পরিবারের গাড়ি চালিয়ে আসছেন।"
এদিকে, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নগরের কালুরঘাট এলাকার একটি কারখানা থেকে বিলাসবহুল কয়েকটি গাড়ি বের হওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, কারখানা থেকে একের পর এক দামি গাড়ি বের হচ্ছে এবং কয়েকজন ব্যক্তি তা তদারকি করছেন। ভিডিওটি শেয়ার করা ব্যক্তি দাবি করেন, এগুলো এস আলম গ্রুপের গাড়ি এবং যারা তত্ত্বাবধানে ছিলেন, তারা বিএনপির নেতা-কর্মী। এ ঘটনার পর দলটি দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানসহ তিন নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়।
f ff
ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম (এস আলম)। দেশের ছয়টি ব্যাংকের মালিকানা ছিল এই গ্রুপের হাতে। ক্ষমতার পরিবর্তনের পর এস আলম গ্রুপের দুর্নীতি একে একে সামনে আসে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল ইসলাম (এস আলম) ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে ১ লাখ ১৩ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে।
0 Comments