ইসলামী ব্যাংকগুলোর আমানত এক মাসে ৩,৫০০ কোটি টাকা কমে গেছে।

 ইসলামী ব্যাংকগুলোর আমানত এক মাসে ৩,৫০০ কোটি টাকা কমে গেছে।


দেশের ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোতে বড় ধরনের ঋণ অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে, যার নেতৃত্বে রয়েছে বিতর্কিত চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপ। এ কারণে এসব ব্যাংকের প্রতি গ্রাহকদের আস্থা সংকটে পড়েছে। এর ফলে, চলতি বছরের জুলাই মাসে ইসলামী ব্যাংকগুলোর আমানত আগের মাসের তুলনায় ৩ হাজার ৬৩১ কোটি টাকা কমেছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জুন শেষে পূর্ণাঙ্গ ইসলামী ব্যাংকগুলোর আমানতের পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৯৮ হাজার ৭৫ কোটি টাকা, যা জুলাইয়ে কমে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৪৪৪ কোটি টাকায়। এই হিসেবে এক মাসে ৩ হাজার ৬৩১ কোটি টাকা আমানত কমেছে।


ব্যাংক খাতের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একদিকে আমানত কমছে, অন্যদিকে ঋণ বিতরণ বাড়ছে—এটি প্রমাণ করে যে ইসলামী ব্যাংকগুলোর পরিস্থিতি ভালো নয়। তাদের আয় কমে যাচ্ছে, অথচ ব্যয় বাড়ছে। এসব সমস্যার মূলে রয়েছে সুশাসনের অভাব, যা ব্যাংকগুলোর প্রতি গ্রাহকদের আস্থা হ্রাস করেছে।


বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, ২০২৪ সালের জুন শেষে পূর্ণাঙ্গ ১০টি ইসলামী ব্যাংক এবং প্রচলিত ব্যাংকগুলোর ইসলামী শাখা ও উইন্ডোতে মোট আমানতের পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ৪০ হাজার ৪২৭ কোটি টাকা, যা জুলাইয়ে কমে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৩৭ হাজার ৪১৩ কোটি টাকায়। অর্থাৎ এক মাসে ৩ হাজার ১৪ কোটি টাকা কমেছে।

ff f

তবে প্রচলিত ব্যাংকের ইসলামিক উইন্ডোগুলোতে আমানত বেড়েছে। জুন শেষে এই উইন্ডোগুলোতে আমানত ছিল ১৬ হাজার ৮০৮ কোটি টাকা, যা জুলাইয়ে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৫৬১ কোটি টাকায়। অর্থাৎ এক মাসে ৭৫৩ কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।


অন্যদিকে, ইসলামী ব্যাংকিং শাখাগুলোতে আমানত কিছুটা কমেছে। জুন শেষে এই শাখাগুলোর আমানত ছিল ২৫ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা, যা জুলাইয়ে কমে দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজার ৪০৭ কোটি টাকায়। এক মাসে ১৩৮ কোটি টাকা কমেছে।


এছাড়া, ইসলামী ব্যাংকগুলো জুনের তুলনায় জুলাইয়ে ১ হাজার ১০৭ কোটি টাকা বেশি ঋণ বিতরণ করেছে। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, জুন শেষে ইসলামী ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগের স্থিতি ছিল ৫ লাখ ১৩ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা, যা জুলাইয়ে বেড়ে ৫ লাখ ১৪ হাজার ৮৪১ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।

f ff

তথ্য অনুযায়ী, ইসলামি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রপ্তানি আয়ও হ্রাস পেয়েছে। জুনে এই আয় ছিল ৭ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা, যা জুলাইয়ে কমে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৫২৬ কোটি টাকায়। এছাড়া, প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রেও একই প্রবণতা দেখা গেছে। জুনে প্রবাসী আয় ছিল ১০ হাজার ৮৪৫ কোটি টাকা, যা জুলাইয়ে কমে ৭ হাজার ৮৯২ কোটি টাকায় নেমে এসেছে।

Post a Comment

0 Comments