মার্কিন নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে হাসিনা

 মার্কিন নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে হাসিনা


আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। দলের বেশিরভাগ নেতাই আত্মগোপনে আছেন, কিছু নেতা গ্রেপ্তারও হয়েছেন। জেলা-উপজেলা পর্যায়েও নেতাকর্মীরা অনুপস্থিত। দীর্ঘ ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের এই পরিস্থিতি নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। প্রশ্ন উঠেছে, আওয়ামী লীগ আবার রাজনীতিতে ফিরতে পারবে কি? যদি পারে, তাহলে কী কৌশলে? এই প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর কারও কাছেই নেই। তবে দলের নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলোর বরাতে জানা গেছে, শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন নির্বাচনের দিকেই নজর রাখছেন। তাঁর ধারণা, এই নির্বাচন আওয়ামী লীগের জন্য নতুন কোনো সুযোগের সৃষ্টি করতে পারে, আবার হতাশাও বয়ে আনতে পারে।

আগামী ৫ই নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ধারণা করা হচ্ছিল, বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। তবে গত জুলাইয়ে বাইডেন সরে দাঁড়িয়ে ভাইস-প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে সমর্থন দেওয়ায় নতুন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হওয়ার সম্ভাবনায় রয়েছেন, আর রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্প দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট হতে মরিয়া।


রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের এই নির্বাচন আওয়ামী লীগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পর্ক বিভিন্ন সময়ে বৈরী ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য অনেক চাপ ছিল, যা আওয়ামী লীগ ভালোভাবে গ্রহণ করেনি। আওয়ামী লীগের কেউ কেউ এমনও দাবি করেছেন যে, জুলাই-আগস্টের অস্থিরতার পেছনে বিদেশি শক্তির হাত ছিল। যদিও যুক্তরাষ্ট্র এ ধরনের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেছে।


আওয়ামী লীগ মনে করছে, যদি ডেমোক্র্যাটরা ক্ষমতায় থাকে, তাহলে তাদের অবস্থান অপরিবর্তিত থাকবে, তবে ট্রাম্প জিতলে পরিস্থিতি পরিবর্তিত হতে পারে এবং আওয়ামী লীগের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি হতে পারে। যদিও কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রে সরকার পরিবর্তন হলেও তাদের নীতি তেমন বদলায় না।

f ff

এদিকে ভারতে অবস্থান নিয়ে শেখ হাসিনা কিছুটা চাপে রয়েছেন। তাঁর কূটনৈতিক পাসপোর্টে ভারতে থাকার নির্দিষ্ট ৪৫ দিন ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে তিনি কীভাবে ভারতে অবস্থান করছেন, তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র জানতে চেয়েছে। গুজব রয়েছে, তিনি ট্র্যাভেল ডকুমেন্ট পেয়েছেন যা দিয়ে তৃতীয় কোনো দেশে যেতে পারেন। তবে এ বিষয়ে ভারত বা বাংলাদেশ সরকার কোনো স্পষ্ট বার্তা দেয়নি।


শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে ইতিমধ্যে গণহত্যার দায়ে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব মামলার বিচার প্রক্রিয়া শিগগিরই শুরু হতে পারে, এবং পরোয়ানা জারি হলে বাংলাদেশ তাঁকে ফেরত চাইতে পারে।

Post a Comment

0 Comments