"ফেব্রুয়ারি বা এপ্রিল নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার জন্য উপযুক্ত সময় হতে পারে।"

 "ফেব্রুয়ারি বা এপ্রিল নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার জন্য উপযুক্ত সময় হতে পারে।"


বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, দেশের আবহাওয়া এবং অন্যান্য পারিপার্শ্বিক বিষয়গুলো বিবেচনায় ফেব্রুয়ারি অথবা এপ্রিল নির্বাচন আয়োজনের জন্য উপযুক্ত সময় হতে পারে।

তিনি বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা এ বছরের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার পরিকল্পনা করেছেন। ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে এবং মার্চের তিন ভাগের দু’টি সময় রোজা থাকবে, তারপরই ঈদ আসবে, এ সময়ে নির্বাচন আয়োজন করা উপযুক্ত হবে না। আমরা মনে করি, ফেব্রুয়ারির শুরু বা এপ্রিলের প্রথমদিকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত। তবে যদি এই সময়ের মধ্যে নির্বাচনী সংস্কার এবং বিচার প্রক্রিয়া জনগণের আস্থার পর্যায়ে না পৌঁছায়, তাহলে এপ্রিল শেষ হওয়ার আগেই নির্বাচন আয়োজন হওয়া উচিত। আমাদের দেশের আবহাওয়া ও পারিপার্শ্বিক বিষয়গুলোও গুরুত্বপূর্ণ।”

শনিবার (৩ মে) সকালে রাজধানীর মগবাজারে আল-ফালাহ মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জেলা ও মহানগর আমির সম্মেলনে উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সম্মেলনটি পরিচালনা করেন সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি ম মাছুম, ড. হামিদুর রহমান আযাদ, মাওলানা আবদুল হালিম, মাওলানা মো. শাহজাহান, অ্যাডভোকেট মুয়াযযম হোসাইন হেলাল, অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়েরসহ কেন্দ্রীয় নির্বাহী ও কর্মপরিষদ সদস্য, জেলা এবং মহানগর আমিররা।

ডা. শফিকুর রহমান সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, "২০১১ সালের এপ্রিল মাসের পর ১৪ বছর পরে এই ধরনের কোনো অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছি। আল্লাহ তায়ালার রহমতে আমাদেরকে এই সুযোগ পুনরায় দেয়া হয়েছে, এর জন্য আমরা আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ।"

তিনি আরও বলেন, “২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত আওয়ামী লীগ এবং তাদের সঙ্গীরা বাংলাদেশকে শাসন ও শোষণ করেছে। এই সময়ে তারা দেশী বিরোধী দল, মত ও বিশেষত ইসলামপন্থী জনগণের ওপর নানা ধরনের অত্যাচার চালিয়েছে। তিনটি বড় গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। প্রথমটি বিডিআর পিলখানায়, দ্বিতীয়টি ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে, এবং তৃতীয়টি ২০২৪ সালের জুলাই থেকে আগস্ট পর্যন্ত।”

ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, “আল্লাহ তায়ালার অশেষ মেহেরবাণীতে গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। আমরা এই পরিবর্তন থেকে শিক্ষা নিয়েছি এবং শান্তি, শৃঙ্খলা এবং ধৈর্যের আহ্বান জানাই।”

f ff

তিনি বলেন, “জাতীয় দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা সবার সহযোগিতা চেয়েছি এবং সবসময় ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করার চেষ্টা করি। তবে যারা দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন এবং দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করেছে, তাদের বিচারের আওতায় আনা দরকার।”

জামায়াত আমির বলেন, “নির্বাচন অবশ্যই সুষ্ঠু হতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে কিছু সংস্কার প্রয়োজন, যা আমরা কমিশনের কাছে উপস্থাপন করেছি। আমরা সবার কাছে আহ্বান জানাই, রাজনীতি জনগণের জন্য, দেশের জন্য। রাজনৈতিক দলগুলো একে অপরকে সহযোগিতা করলেই জাতি উপকৃত হবে এবং নির্বাচন সুষ্ঠু হবে।”

তিনি আরও বলেন, “আনুপাতিক হারে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে কোনও দল ছোট বা বড় হওয়ার প্রশ্ন থাকবেনা। তবে গত কিছুদিনে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিটি যে সুপারিশ দিয়েছে, তা কোরআন ও ইসলামী মূল্যবোধের বিরুদ্ধে।”

শেষে তিনি সকলকে আল্লাহর কাছে দোয়া করতে বলেন, "আমরা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একটি কোরআনভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছি, এবং আল্লাহ যেন আমাদের এই পথে সাহায্য করেন।"

এছাড়া, তিনি সাংবাদিকদের প্রতি একটি বিশেষ অনুরোধ রেখে বলেন, “আপনারা জাতির বিবেক। আপনাদের দায়িত্বশীল আচরণ ও সাহসিকতার মাধ্যমে দেশকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে সাহায্য করুন।”

Post a Comment

0 Comments