চট্টগ্রামের একটি এলাকায় সাড়ে ১১ হাজার ব্যক্তিকে ইসলামী ব্যাংকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এই নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা বা সনদ যাচাইয়ের প্রয়োজন পড়েনি।
১৯ আগস্ট, ২০২৪: ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি-এর পরিচালনা পর্ষদ সাড়ে পাঁচ হাজার কর্মকর্তার চাকরি স্থায়ী করার জন্য একটি নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই পরীক্ষাটি ২৯ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে এবং এ বিষয়ে একটি সার্কুলার ব্যাংকের সকল শাখায় পাঠানো হয়েছে।
প্রথম ধাপে সিনিয়র অফিসার থেকে সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার (এসপিও) পদের কর্মকর্তাদের পরীক্ষা নেওয়া হবে। পর্যায়ক্রমে বাকি কর্মকর্তাদেরও পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।
ব্যাংকের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম জুবায়দুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় এই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, এই কর্মকর্তাদের চাকরির জন্য কোনো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়নি। তারা কেবল সিভি জমা দিয়েই চাকরি পেয়েছিলেন।
চট্টগ্রামের একটি নির্দিষ্ট এলাকার সাড়ে ১১ হাজার ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল কোনো ধরনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা বা সনদ যাচাই ছাড়াই।
সরকার পরিবর্তনের এক বছর পরেও এই বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হওয়ায় ইসলামী ব্যাংক সমালোচিত হয়। অবশেষে, ব্যাংকের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশে এই পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অপর একটি সূত্র জানায়, গত বছর সরকার পরিবর্তনের পর ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক এবং ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রায় সাত হাজার কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এদের মধ্যে অধিকাংশই চট্টগ্রামের একটি উপজেলার বাসিন্দা।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি এস আলম গ্রুপ বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন গভর্নর ফজলে কবির এবং একটি গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় ইসলামী ব্যাংক দখল করে। ব্যাংকের নিরীক্ষায় উঠে এসেছে যে তারা বিভিন্ন উপায়ে এই ব্যাংক থেকে ৯১ হাজার কোটি টাকা বের করে নিয়েছে। এস আলম গ্রুপ ব্যাংকটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর সাবেক এমডি মনিরুল মওলা প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন। তাকে দ্রুত পদোন্নতি দিয়ে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং পরে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে এমডি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।
গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের অধিকাংশ সদস্য এবং অধিকাংশ ডিএমডি আত্মগোপনে চলে যান। তবে অদৃশ্য কারণে মনিরুল মওলা তার পদে বহাল ছিলেন।
ইসলামী ব্যাংকের একজন স্বতন্ত্র পরিচালক জানান, নতুন পর্ষদ দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই মনিরুল মওলাকে অপসারণের দাবি ছিল। অডিট রিপোর্টে এস আলম গ্রুপের ঋণ জালিয়াতি এবং নাবিল গ্রুপের ১৩ হাজার ৬৪৫ কোটি টাকার জালিয়াতিসহ বিভিন্ন অনিয়মে তার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।
0 Comments