চট্টগ্রামে বিএনপির কমিটিতে ‘এস আলম’ সংযোগ!

 চট্টগ্রামে বিএনপির কমিটিতে ‘এস আলম’ সংযোগ!


চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির নতুন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া ঘিরে আবারও বিতর্কের আগুন জ্বালিয়েছে ‘এস আলম কানেকশন’– বিশেষ করে পটিয়া উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপির নেতৃত্বে অভিযোগ ওঠেছে, এস আলম গ্রুপের প্রভাবশালীদের ঘনিষ্ঠদের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হচ্ছে। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে এ নিয়ে উত্তেজনা ও রোষ хүчগড়ে উঠেছে।

দল ইতিমধ্যে জেলা কমিটি পদপ্রত্যাশীদের তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অভিযোগ করার সুযোগ দিয়েছে। এ প্রক্রিয়া সামনে আসতেই নতুন কমিটি নিয়ে ব্যাপক তোড়জোড় শুরু হয়েছে — কেউ কেউ কেন্দ্রীয় নেতাদের দ্বারে ধাওয়া দিচ্ছেন, আবার বিতর্কিত কিছু নেতা হঠাৎ সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। তদবিরের মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের জন্য পদ নিশ্চিত করার চেষ্টা থেমে নেই।

তৃণমূল নেতারা সতর্ক করেছেন — যদি ত্যাগী, দক্ষ ও দুঃসময়ে পরীক্ষিত নেতাদের বাদ দিয়ে এস আলম গ্রুপের স্বার্থসংশ্লিষ্টরা কমিটিতে জায়গা পায়, তাহলে দল অভ্যন্তর থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এতে নেতা-কর্মীরা হতাশ হবেন এবং দলের ভেতরে নতুন রাজনৈতিক গ্রুপ গড়ে উঠতে পারে।

f ff

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য-সচিব লায়ন হেলাল উদ্দিন বলেছেন, ‘এস আলমের মানুষ কমিটিতে ঢুকবে এমন কোনো সুযোগ নেই। যোগ্য ও দক্ষ ও দুঃসময়ে পরীক্ষিত নেতারাই মূল্যায়ন পাবেন। যাদের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ আছে, তাদের কমিটিতে কোনো স্থান হবে না।’

একটি লিখিত অভিযোগে, পটিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ কলিম উল্লাহ চৌধুরী জানিয়েছেন, পটিয়া উপজেলা বিএনপির সদস্য-সচিব খোরশেদ আলম কল-কারখানায় চাঁদাবাজি ও মামলা-হামলায় জড়িত। তিনি দাবি করেছেন, এস আলম গাড়ি সরানোর ঘটনায় তার অংশগ্রহণ ছিল, যা তিনি এক সংবাদ সম্মেলনে স্বীকার করেছেন। অভিযোগ রয়েছে, একটি অডিও ক্লিপে দেখা যায়, তিনি একজন শ্রমিক লীগ নেতাকে মামলায় অন্তর্ভুক্ত না করার গ্যারান্টি দিচ্ছেন।

২০২৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে তৃণমূল কর্মীরা দাবি করেন, এনামুল হক ছিলেন আওয়ামী লীগ আমলে ব্যবসায়ী হিসেবে রাজনৈতিক আঁতাতকারী এবং দলের দুঃসময়ে সুবিধাভোগী ছিলেন। যদিও পরে বিএনপির কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে তাঁর ও দুই নেতার বহিষ্কারাদেশ তুলে নেওয়া হয়।

২০২৫ সালের ৬ মে মো. ইদ্রিস মিয়াকে আহ্বায়ক ও লায়ন হেলাল উদ্দিনকে সদস্য-সচিব করে ৫৪ সদস্যবিশিষ্ট দক্ষিণ জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এর পরেই বিতর্কিত নেতারা আবার সক্রিয় হতে শুরু করেছেন। অভিযোগ রয়েছে, এস আলম গ্রুপ তাদের ঘনিষ্ঠদের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়ে রাজনৈতিক সুবিধা নিশ্চিত করতে মরিয়া।

কেন্দ্রীয় হাইকমান্ড জানিয়ে দিয়েছে, যারা দুঃসময়ে মাঠে ছিলেন, মামলা-হামলার শিকার হয়েছেন এবং ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন — শুধু তারাই নতুন কমিটিতে স্থান পাবেন।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ২৯ আগস্ট রাতে চট্টগ্রামের কালুরঘাটের বিসিক এলাকায় মীর গ্রুপের গুদাম থেকে ১৪টি বিলাসবহুল গাড়ি সরিয়ে নেওয়া হয়। এ ঘটনায় ২ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম ও আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এসএম মামুন মিয়াকে দল থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

Post a Comment

0 Comments