অবৈধকে ‘অবৈধ’ হিসেবে স্বীকার করতেই হবে, নয়তো ব্যাংকের শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হবে। তদুপরি, যাঁরা অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত, তাদের বেতন-ভাতা আইনি দৃষ্টিকোণ থেকে বৈধ নয়।

 অবৈধকে ‘অবৈধ’ হিসেবে স্বীকার করতেই হবে, নয়তো ব্যাংকের শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হবে। তদুপরি, যাঁরা অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত, তাদের বেতন-ভাতা আইনি দৃষ্টিকোণ থেকে বৈধ নয়।

২০১৭-২০২৪ মেয়াদে, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশে বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে পরিচালনা পর্ষদ পরিবর্তন করা হয়। এর পর থেকেই শুরু হয় নিয়োগে অনিয়ম: অধিকাংশ নিয়োগ পান এলাকার ভিত্তিতে, অনেকেই ন্যূনতম যোগ্যতা বা দক্ষতা বা ভদ্রতাও ছিল না। শিল্পপতি ও রাজনৈতিক নেতাদের সুপারিশে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা অফিসে এক ধরনের প্রভাব খাটিয়েছেন।

বিশ্লেষকদের মতে, যদি অবৈধ নিয়োগকে অবৈধ বলেও স্বীকার না করা হয়, তাহলে ব্যাংকের শৃঙ্খলা নষ্ট হবে। আরও বলা হয়েছে, অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্তদের দেওয়া বেতন-ভাতা আইনি দিক থেকে বৈধ নয়, তাই এসব অর্থ ফেরতের জন্য আদালতে যেতে হবে।

সম্প্রতি এসব কর্মীদের মূল্যায়ন পরীক্ষা নেওয়ার চেষ্টা করা হয়, তবে বাধা সৃষ্টি হয়। এসব অবৈধ কর্মকর্তা ব্যাংককে বিশৃঙ্খলার মধ্যে ফেলছেন।

ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী ওমর ফারুক খান ‘জনকণ্ঠকে’ বলেন, তাদের কোনও এলাকা বা ব্যক্তি বিরোধী মনোভাব নেই। মূল সমস্যা হলো—২০১৭ থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত যে নিয়োগ হয়েছে, সেগুলোর প্রায় কেউই নিয়মগতভাবে হয়নি। শুধু চট্টগ্রাম জেলায়ই সাত হাজার ২২৪ জন নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছে।

ff f

মূল্যায়ন পরীক্ষায় ৫,৩৮৫ জনকে অংশ নেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু মাত্র ৪১৪ জন পরীক্ষায় বসেন। যারা পরীক্ষায় অংশ নেননি, তাদের মধ্যে অনেকেই শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন এবং গ্রাহকদের আস্থা নষ্ট করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে; এই ভিত্তিতে ২০০ জনকে চাকরিচ্যুত এবং ৪,৭৭১ জনকে ওএসডি করা হয়েছে।

এস আলম-গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলমের নিজ উপজেলার (পটিয়া) প্রার্থীদের সংখ্যা নিয়োগপ্রাপ্তের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই বা নকল সার্টিফিকেট দিয়ে নিয়োগের অভিযোগ রয়েছে।

ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, অবৈধ নিয়োগের কারণে বার্ষিক ক্ষতি প্রায় ১,৫০০ কোটি টাকা; গত সাত বছরে এই ক্ষতির পরিমাণ ১০,০০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক ও আদালতের দৃষ্টিতে, ব্যাংকের নিয়োগ, চাকরির শর্ত ও মূল্যায়ন প্রক্রিয়া অবশ্যই দেশের আইন ও নিয়মানুসারে হতে হবে।


Post a Comment

0 Comments