এস আলমের অবৈধ নিয়োগ বাতিলের দাবিতে ঢাকাসহ সারাদেশে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ

 এস আলমের অবৈধ নিয়োগ বাতিলের দাবিতে ঢাকাসহ সারাদেশে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ


এস আলম কর্তৃক অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্ত অদক্ষ কর্মকর্তাদের ইসলামী ব্যাংক থেকে অপসারণের দাবিতে আজ (৬ অক্টোবর) ইসলামী ব্যাংক শেয়ারহোল্ডারস ফোরাম ঢাকার দিলকুশায় ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে। একযোগে, সারাদেশের প্রতিটি ইসলামী ব্যাংক শাখার সামনে ইসলামী ব্যাংক গ্রাহক ফোরাম অবিলম্বে এসব অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করার দাবি নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে।

সমাবেশে বক্তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্তদের অপসারণের আহ্বান জানান। তারা মন্তব্য করেন, যদি আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে এসব কর্মকর্তাকে অপসারণ করা না হয়, তাহলে শেয়ারহোল্ডার ও গ্রাহকরা বৃহত্তর আন্দোলন শুরু করবেন।

প্রধান কার্যালয়ের সামনে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মো. মোহতাছিম বিল্লাহ, হাফিজুর রহমান, ইমাম হোসাইন, মাহমুদুল হাসান, এটিএম সিরাজুল হক, ড. হারুনুর রশিদ, মো. মুস্তাফিজুর রহমান, মো. রতনসহ আরও অনেকে।

f ff

এই সময় Islami Bank গ্রাহক ফোরাম, সচেতন ব্যবসায়ী ফোরাম, ইসলামী ব্যাংক প্রাক্তন ব্যাংকার পরিষদ, বৈষম্যবিরোধী চাকুরি প্রত্যাশী পরিষদ, সচেতন পেশাজীবী গ্রুপ, ইসলামী ব্যাংক সিবিএ এবং সচেতন ব্যাংকার সমাজ একই দাবীতে অংশগ্রহণ করে।

বক্তারা বলেন, ২০১৭ সালে এস আলম রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে ব্যাংক দখল করেন এবং বৈধ মালিকদের উচ্ছেদ করেন। বিদেশী শেয়ারহোল্ডারদেরও ভয়ভীতি দেখিয়ে বিতাড়িত করা হয়। তার পর থেকে তিনি ইচ্ছামত নিয়োগ দিয়ে কোটি কোটি টাকা আয় করেছেন।
তারা আরও দাবি করেন, এসব অবৈধ নিয়োগের ফলে প্রতি বছর প্রায় ১,৫০০ কোটি টাকার বেশি ব্যয় হচ্ছে। ব্যাংক পুরাতন কর্মীদের বাদ দিয়ে পটিয়া ও চট্টগ্রামের নির্দিষ্ট এলাকায় নিয়োগের মাধ্যমে দেশের অন্যান্য প্রার্থীদের বাদ দেওয়া হয়েছে।

আন্দোলনকারীরা বলছেন, অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্তদের অপসারণে কোনোভাবেই মানবাধিকার লঙ্ঘন হবে না। দীর্ঘ সময়ের চাকরিতে থাকা কর্মীদের বাদ দিয়ে অমেধাবী ও অযোগ্যদের নিয়োগ দিয়ে ব্যাংকের শৃঙ্খলা, আস্থা ও সেবা ধ্বংস করা হয়েছে।

এছাড়া বক্তারা জানান, ২০১৭ থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন পদে ৭,২২৪ জনকে অবৈধভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যাদের মধ্যে ৪,৫০০ জনই পটিয়া উপজেলার।
২০২৪ সালের মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত দেড় শতাধিক কর্মকর্তা কর্মচারিকে ভয়ভীতি ও বাধ্যবাধকতার মাধ্যমে অবসর বা বরখাস্ত করা হয়েছে।

এক জন চালক নূরুল হক বলেন, তাকে এবং কয়েকজন অন্যকে “পদত্যাগপত্র দিতে” বলা হয়, হুমকি দেওয়া হয়েছিল সার্ভিস বেনিফিট থেকে বঞ্চিত করার, ফলে তারা বাধ্য হয়ে পদত্যাগপত্র দেন।
এক নির্বাহী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন, এস আলমের নির্দেশে ভুয়া বিনিয়োগ ফাইলের সঙ্গে সাক্ষর না করায় কয়েকজন ঊর্ধ্বতন নির্বাহীকে গ্রেফতার ও মিডিয়ায় অপমান করা হয়, পরবর্তীতে তাদের চাকরিচ্যুত করা হয়।

উল্লেখ্য, অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্তদের দক্ষতা নির্ধারণের জন্য ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএর সহযোগিতায় মূল্যায়ন পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু ওই কর্মকর্তারা পরীক্ষা দিতে অস্বীকার করেন। বরাবর ব্যাংক ৫,৩৮৫ জনকে পরীক্ষায় অংশ নিতে বললেও মোট ৪,৯৭১ জন অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকেন, শুধুমাত্র ৪১৪ জন পরীক্ষায় অংশ নেন।
পরবর্তীতে, পরীক্ষায় অংশ না নেওয়ার কারণে কিছু কর্মকর্তাকে OSD (অপারেশনে অব্যবহিত) করা হয় এবং প্রায় ৪০০ জনকে চাকরিচ্যুত ঘোষণা করা হয়।

Post a Comment

0 Comments