এস আলম গ্রুপকে শোধনাগার প্রকল্প থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। 


 জ্বালানি তেল পরিশোধনাগার নির্মাণ প্রকল্পে আর অংশ নিচ্ছে না এস আলম গ্রুপ। ক্ষমতার পালাবদলের পর অন্তর্বর্তী সরকার এই ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর সঙ্গে চুক্তি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।


বর্তমানে দেশের একমাত্র জ্বালানি তেল পরিশোধনাগার হলো ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড (ইআরএল), যা ১৯৬৮ সালে চট্টগ্রামে স্থাপিত হয় এবং বছরে ১৫ লাখ টন তেল পরিশোধন করতে সক্ষম। এটি পরিচালনা করে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি), যা জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অধীনে। নতুন প্রকল্পের অধীনে ৩০ লাখ টন ক্ষমতাসম্পন্ন আরেকটি ইউনিট স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে, যা ‘ইনস্টলেশন অব ইআরএল-২’ নামে পরিচিত। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বছরে প্রায় ২৪ কোটি ডলার সাশ্রয় হবে।


এস আলম গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের বিষয়ে বিপিসি ও ইস্টার্ন রিফাইনারির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশে এস আলম গ্রুপ প্রকল্পে যুক্ত হয়েছিল। গ্রুপটি বিনিয়োগের নামে ৫১ শতাংশ মালিকানা চেয়েছিল, যা কেউ মেনে নেয়নি। বিপিসি চেয়েছিল ৬০ শতাংশ মালিকানা সরকারের হাতে রাখতে। এর পরিপ্রেক্ষিতে চূড়ান্ত চুক্তি না করে একটি সমঝোতা স্মারক সই করার সিদ্ধান্ত হয়। এই স্মারক খসড়াটি আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হয়। তবে সরকার পরিবর্তন না হলে চুক্তিটি বন্ধ করা যেত না বলে কর্মকর্তারা মনে করছেন।

জ্বালানি বিভাগও এস আলম গ্রুপের অংশীদারত্বে পরিশোধনাগার নির্মাণে সম্মত ছিল না। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে চুক্তি বাতিলের প্রস্তাব করা হয় এবং নতুন করে প্রকল্প বাস্তবায়নের উপায় ঠিক করা হবে।


জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মো. নূরুল আলম বলেছেন, নতুন পরিশোধনাগার নির্মাণ প্রকল্পটি নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়িত হবে এবং উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করা হবে।


বিপিসির সূত্র মতে, ২০২৬-২৭ অর্থবছরে দেশে জ্বালানি তেলের চাহিদা ৮০ লাখ টনে পৌঁছতে পারে। আমদানি করা জ্বালানি তেলের মাধ্যমে এ চাহিদা পূরণ করতে গেলে অর্থনীতির ওপর চাপ তৈরি হবে এবং বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করা যাবে না। দেশে তেল পরিশোধনের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য দ্রুত ইআরএল-২ প্রকল্প বাস্তবায়ন জরুরি। 


এস আলম গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের বিষয়ে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম. তামিম বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের এই সিদ্ধান্ত সঠিক এবং প্রকল্পটি নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়িত হলে তা আরও সাশ্রয়ী হবে। দ্রুত পরিশোধনাগার নির্মাণ করা উচিত। 

fff

বর্তমান ইস্টার্ন রিফাইনারির পরিশোধনাগারটি নির্মাণ করেছিল ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠান টেকনিপ। ইআরএল-২ প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রায় ১৯ হাজার ৭৬৯ কোটি টাকা খরচ হবে এবং প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে জ্বালানি নিরাপত্তা আরও জোরদার হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

Post a Comment

0 Comments