**ভেঙে যাচ্ছে এস আলমের ৭টি ব্যাংকসহ ১২টি ব্যাংকের পর্ষদ**

 বাংলাদেশ ব্যাংক আগামী সপ্তাহের মধ্যে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

**ভেঙে যাচ্ছে এস আলমের ৭টি ব্যাংকসহ ১২টি ব্যাংকের পর্ষদ**

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ব্যাংক খাতের অনিয়মগুলো প্রকাশ পেতে শুরু করেছে। এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণাধীন সাতটি ব্যাংক, যেগুলো এতদিন অনৈতিক সুবিধা পেয়ে টিকে ছিল, সেগুলোসহ মোট ১২টি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সূত্রে জানা গেছে, এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং নীতি ও প্রবিধি বিভাগ ইতিমধ্যেই কার্যক্রম শুরু করেছে। আগামীকাল রোববারের মধ্যে দাপ্তরিক কাজ শেষ হবে, এরপর গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক আগামী সপ্তাহের মধ্যে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেখানে একজন প্রশাসক বসানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। বিকল্প হিসেবে, পুরো পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন পর্ষদ গঠন করা হতে পারে, যেখানে ২০১৭ সালের আগে পর্ষদে থাকা সদস্যদের মধ্যে কয়েকজনকে ফিরিয়ে আনা হতে পারে। তবে এস আলমের শেয়ার স্থানান্তর জটিলতার কারণে এ প্রক্রিয়ায় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হচ্ছে।

ff f

এদিকে, ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার দাবি জানিয়ে গত বৃহস্পতিবার ব্যাংকটির সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে বলা হয়, বিভিন্ন গণমাধ্যমে ইসলামী ব্যাংকের তহবিল লুটপাটের চিত্র প্রকাশিত হয়েছে এবং বাস্তবতা আরও ভয়াবহ। ব্যাংকের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে, এবং গণমানুষের আস্থার সংকট দেখা দিয়েছে। ইসলামী ব্যাংকের স্বার্থ রক্ষা, গ্রাহকের আস্থা ফিরিয়ে আনা, এবং ব্যাংকের স্বাভাবিক কার্যক্রম পুনরায় চালু করার লক্ষ্যে বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন একটি দুর্নীতিমুক্ত পর্ষদ গঠন করার দাবি জানানো হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন যে ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সেগুলো হলো ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, এবং আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক। এছাড়া এস আলমের বাইরের আইএফআইসি ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি), এবং পদ্মা ব্যাংকও এ তালিকায় রয়েছে। বাকি তিনটি ব্যাংকের নাম জানা যায়নি।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার এস আলম গ্রুপের সাতটি ব্যাংকের নতুন ঋণ বন্ধের নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর আগে, মঙ্গলবার এস আলমের সাতটি ব্যাংকসহ মোট নয়টি ব্যাংকের লেনদেনের বিশেষ সুবিধা বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া, এস আলমের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে অর্থ পাচার ঠেকাতে ১ কোটি টাকার বেশি লেনদেনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর দায়িত্ব গ্রহণের পর বলেছেন, ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে প্রয়োজন হলে এস আলমের মালিকানাধীন দুর্বল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিতে হবে। নির্ধারিত সময় ফ্রেম বলা কঠিন, তবে ব্যাংকের নিয়ম ভেঙে কোনো কাজ করার সুযোগ আর কেউ পাবে না।

Post a Comment

0 Comments