মাঠের কর্মীরা দুঃসময়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশে না পাওয়ায় গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা আড়ালে চলে গেছেন। দলের নেতাকর্মীদের প্রতি কোনো সাংগঠনিক নির্দেশনা প্রদান করা হচ্ছে না, যা মাঠপর্যায়ের কর্মীদের মধ্যে গভীর ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। কালের কণ্ঠকে গত এক সপ্তাহে অনেক নেতাকর্মী তাঁদের অসন্তোষের কথা জানিয়েছেন।
ff f
বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেছেন যে টানা ১৬ বছর ক্ষমতায় থাকার পর, ক্ষমতাচ্যুত হতেই কেন্দ্রীয় নেতারা গা ঢাকা দিয়েছেন, যা দলের সংকটকে আরো প্রকট করে তুলেছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জান-মালের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
এই পরিস্থিতিতে, সাধারণ নেতাকর্মীরা কেন্দ্রীয় নেতাদের কোনো খোঁজ পাচ্ছেন না। তাঁরা কালের কণ্ঠের কাছে জানতে চান, এই কঠিন সময়ে সামনে এসে কর্মীদের মনোবল বাড়ানোর মতো কেউ কি নেই?
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দলের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেন। এর পরপরই রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে, যেখানে দলের বহু নেতাকর্মী প্রাণ হারিয়েছেন।
কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে কেউ কেউ দেশ ছেড়ে যেতে পারেননি, তবে তাঁরা গ্রেপ্তার ও মামলার আতঙ্কে ভুগছেন, যার ফলে গণমাধ্যমে কথা বলছেন না এবং কর্মীদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন না।
১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসেও কেন্দ্রীয় নেতারা প্রকাশ্যে আসেননি। বিএনপি, জামায়াত, ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভয়ে তাঁরা মাঠে নামেননি। এদিন গণমাধ্যমে কেন্দ্রীয় নেতাদের পক্ষ থেকে কোনো বিবৃতি বা ভিডিও বার্তা প্রকাশিত হয়নি, যা নিয়ে দলের ভেতরেই সমালোচনা শুরু হয়।
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হালিমা আক্তার লাবণ্য এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি লেখেন, মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দলের নেতাদের মধ্যে কেউ বিবৃতি বা ভিডিও বার্তা দিতে পারলেন না, যা দলটির নেতাদের দুর্বলতা প্রকাশ করেছে।
অনেক নেতাকর্মী এখন প্রভাবশালী নেতাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন এবং তাঁদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া অন্যায়-অবিচার প্রকাশ করছেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমানের গ্রেপ্তারের ঘটনার পর মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম কৃকও ফেসবুকে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান।
আওয়ামী লীগের একাধিক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক কালের কণ্ঠকে জানান, কর্মীদের অভিযোগগুলো মিথ্যা নয়। তবে এখন বিভক্তির সময় নয়, বরং নিজেদের প্রস্তুতির জন্য কিছুটা সময় নিচ্ছেন তাঁরা।

0 Comments