ভদ্র ও সুন্দর আচরণ জান্নাতের পথ সহজ করে।
উত্তম ব্যবহার একটি মহৎ গুণ, যা ইসলামি শিক্ষার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ইসলামে ভালো আচরণকে ইবাদতের অংশ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে, এবং কোরআন ও হাদিসে এর গুরুত্ব বারবার উল্লেখ করা হয়েছে। ভালো ও সুন্দর ব্যবহার জান্নাতের পথকে সহজ করে এবং দুনিয়াতে মানুষকে মহান করে তোলে। এটি সমাজে শান্তি ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরও দৃঢ় করে। মহান আল্লাহ কোরআনে বলেন, ‘নিশ্চয়ই আপনি মহান চরিত্রের অধিকারী।’ (সুরা কালাম ৪) এই আয়াতে আল্লাহ রাসুল (সা.)-এর চরিত্রের মহত্ত্ব এবং উত্তম আচরণের প্রশংসা করেছেন।
m
mm
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি সর্বোত্তম, যার ব্যবহার সবচেয়ে ভালো।’ (সহিহ বুখারি) আরেক হাদিসে তিনি বলেছেন, ‘তুমি মুমিন হতে পারবে না, যদি তোমার প্রতিবেশী তোমার অনিষ্ট থেকে নিরাপদ না থাকে।’ (সহিহ মুসলিম) তাই একজন মুসলমানের উচিত সর্বদা মানুষের সঙ্গে ভালো আচরণ করা, যা তাকে আল্লাহর কাছে প্রিয় করবে, সমাজে মর্যাদা বৃদ্ধি করবে, এবং পরকালে পুরস্কৃত করবে।
প্রতিবেশীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহারের গুরুত্বও ইসলামে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস রাখে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে সম্মান করে।’ (সহিহ বুখারি) প্রতিবেশীর সঙ্গে সদাচরণ সামাজিক বন্ধনকে সুদৃঢ় করে এবং সমাজে শান্তি ও স্থিতিশীলতা আনয়নে সহায়ক হয়।
m
mm
ইসলামে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের প্রতিও ভালো ব্যবহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘যারা দ্বীনের কারণে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদের বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়নি, তাদের প্রতি সদয় ব্যবহার ও ন্যায়বিচার করতে আল্লাহ তোমাদের নিষেধ করেন না। নিশ্চয় আল্লাহ ন্যায়পরায়ণদের ভালোবাসেন।’ (সুরা মুমতাহিনা ৮)
ভালো আচরণের উদাহরণ হিসেবে কোরআনে বলা হয়েছে, ‘ভালো এবং মন্দ সমান হতে পারে না। মন্দকে এমন আচরণ দিয়ে প্রতিহত করো, যা সর্বোত্তম। তখন দেখবে, যার সঙ্গে তোমার শত্রুতা ছিল, সে যেন ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে গেছে।’ (সুরা হামিম সাজদাহ ৩৪) এটি অন্যায়ের পরেও ধৈর্য ও উত্তম চরিত্র প্রদর্শনের শিক্ষা দেয়।
m
mm
সুতরাং, ভালো আচরণ ইসলামি জীবনধারার অপরিহার্য অংশ। উত্তম চরিত্র শুধু ইবাদত নয়, এটি সমাজে শান্তি ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে উত্তম আচরণের গুণে গুণান্বিত করুন।

0 Comments