ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদে এক ব্যাংকে ১৪৫ জন কর্মরত!
মীর মোহাম্মদ শাহীন, কর্মসংস্থান ব্যাংকের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার, ২০১১ সালে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সিনিয়র অফিসার হিসেবে ব্যাংকে যোগ দেন। তার নিয়োগের পর ১৪ বছর পার হয়ে গেছে এবং তিনি একাধিক পদোন্নতি পেয়ে নিজে পছন্দসই শাখায় কর্মরত আছেন। তবে সম্প্রতি তার নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ভয়াবহ জালিয়াতি ফাঁস হয়ে গেছে। তদন্তে জানা যায়, শাহীন তার পিতা মীর মোশারফ হোসেনের মুক্তিযোদ্ধা সনদটি ভুয়া ব্যবহার করেছেন। গেজেট নম্বরও নকল, এবং টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলায় তার পিতার নামে কোনো মুক্তিযোদ্ধা নেই। এমনকি শাহীনের পৈতৃক গ্রামেও কেউ জানে না তার বাবা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন।
এছাড়া, মানবজমিনের অনুসন্ধানে আরও বেরিয়ে এসেছে, ২০১১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা কোটায় অন্তত ১৪৫ জন ব্যক্তি ব্যাংকে নিয়োগ পেয়েছেন, যাদের সবার গেজেট নম্বর ভুয়া। এই ব্যক্তিরা বিভিন্ন পদোন্নতি পেয়ে এখন সহকারী মহাব্যবস্থাপক, সিনিয়র অফিসার, এবং ডাটা এন্ট্রি অফিসার পর্যন্ত হয়েছেন। অনেকেই দ্রুত পদোন্নতি পেয়ে কোটি টাকার মালিক হয়ে উঠেছেন, কিনেছেন ফ্ল্যাট, গাড়ি, এবং বিদেশে ভ্রমণ করছেন।
f ff
তাদের মধ্যে বেশিরভাগই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। মানবজমিনের অনুসন্ধানে দেখা যায়, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগ পাওয়া ৩০ জনের মধ্যে কেউ এই বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি। কেউ বলেছেন, তারা মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগ পেয়েছেন কিন্তু সনদপত্রের কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় জানায়, কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে পাঠানো ১৪৭ জনের তালিকার বেশিরভাগের গেজেট নম্বর নকল, এবং মন্ত্রণালয়ের তালিকায় এসব নাম পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী তদন্ত করবেন। তবে, মন্ত্রণালয়ের ক্লিয়ারেন্স ছাড়া পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে পারবেন না।
0 Comments