"সম্মান ও সমতা নিয়ে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক চাই" - ড. শফিকুর রহমান, আনন্দবাজার পত্রিকায়।

 "সম্মান ও সমতা নিয়ে ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক চাই" - ড. শফিকুর রহমান, আনন্দবাজার পত্রিকায়।


সংগ্রাম অনলাইন: জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের আমির ড. শফিকুর রহমান আনন্দবাজার পত্রিকায় এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “আমরা ভারতসহ সমস্ত প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সমান মর্যাদা এবং সম্মানের ভিত্তিতে সুসম্পর্ক রাখতে চাই। আমাদের আন্তর্জাতিক নীতি হল, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়।”

প্রশ্ন: জামায়াতে ইসলামী সাধারণত ভারত-বিরোধী হিসেবে পরিচিত, আপনি কী বলবেন?

উত্তর: আমি সম্পূর্ণ অস্বীকার করছি। এ ধারণাটি ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাদের বিরুদ্ধে ছড়ানো হয়েছে, যাতে জামায়াতের রাজনীতির ভুল ব্যাখ্যা ও বিভ্রান্তি তৈরি করা হয়। আমরা ভারতের সঙ্গে সমান মর্যাদা এবং সম্মানের ভিত্তিতে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চাই। আমাদের আন্তর্জাতিক নীতি হলো, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়। আমরা আশা করি ভারতও একইভাবে পারস্পরিক বিশ্বাস ও সহাবস্থানের ভিত্তিতে প্রতিক্রিয়া জানাবে।


প্রশ্ন: জামায়াতে ইসলামীকে কট্টর ইসলামী সংস্থা হিসেবে দেখা হয়, বিশেষ করে ইসলামিক ব্রাদারহুডের অংশ হিসেবে। নিজেদের সংগঠন সম্পর্কে কী ভাবেন?

উত্তর: এটি একেবারেই ভুল ধারণা। জামায়াতে ইসলামী একটি আধুনিক, উদার এবং গণতান্ত্রিক দল, যার ভিত্তি ইসলামিক আদর্শ। আমরা একটি স্বাধীন রাজনৈতিক দল, এবং বিশ্বের অন্য কোনও রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই।

প্রশ্ন: বিএনপি-র একটি অংশ আপনাদের কট্টরপন্থী মনোভাব নিয়ে অস্বস্তি প্রকাশ করেছে। কী বলবেন?

উত্তর: কট্টরপন্থী মনোভাবের ধারণা পরিষ্কার নয়। জামায়াত একটি আধুনিক, উদার এবং গণতান্ত্রিক দল, যার আদর্শ ইসলামের। আমরা যুক্তিগ্রাহ্য, বাস্তবসম্মত এবং মধ্যপন্থা নিয়ে রাজনৈতিক নীতি নির্ধারণ করি। বিএনপি দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সঙ্গী এবং তারা আমাদের আধুনিক মনোভঙ্গি সম্পর্কে অবগত।

ff f

প্রশ্ন: সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে কিছু অসন্তোষ দেখা যাচ্ছে, বিশেষ করে সরকারের সঙ্গে সম্পর্কিত হিংসার প্রতিবাদে। জামায়াত কী ভরসা দেবে?

উত্তর: জামায়াতে ইসলামী এবং বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে অসামান্য সম্পর্ক রয়েছে। আমরা সকল নাগরিককে সমান মর্যাদা এবং অধিকার প্রদান করি, এবং ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজনকে অপরাধ মনে করি। জামায়াতে ইসলামী কখনোই হিন্দু বা অন্য কোনও সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে হিংসা করতে বা বিভেদ সৃষ্টি করতে বিশ্বাসী নয়। বরং, আমরা বিভিন্ন সময় হিন্দু নেতাদের সঙ্গে আলোচনাও করেছি।

প্রশ্ন: শেখ হাসিনার সরকারের ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। জামায়াত সরকারে এলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক কেমন হবে?

উত্তর: আমি মনে করি, ভারতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পর্ক কেবলমাত্র দ্বিপাক্ষিক ছিল, এবং এর পিছনে নির্দিষ্ট কিছু স্বার্থ কাজ করেছিল। আমাদের অবস্থান হল, ভারতসহ সকল প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে পারস্পরিক সম্মান এবং সমতার ভিত্তিতে সম্পর্ক স্থাপন করা। সরকারে আসলে, আমরা সেরকমই করতে চাই।

প্রশ্ন: কিছু মানুষের ধারণা, জামায়াত অন্তর্বর্তী সরকার এবং বিএনপির বিরুদ্ধে একসঙ্গে কাজ করছে। এর সত্যতা কী?

উত্তর: এ ধারণার কোনও ভিত্তি নেই। আওয়ামী লীগের প্রতি জনগণের ঘৃণা দুর্নীতি ও ফ্যাসিবাদী নীতির কারণে ছিল, এবং তারা নিজেদের পতন ডেকে এনেছে। আমরা কখনও চাই না কোনও রাজনৈতিক দলকে সরানো হোক। জনগণের সম্মিলিত প্রজ্ঞা আমরা সম্মান করি এবং তাদের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করি।

Post a Comment

0 Comments