ইসলামী ব্যাংকের এমডি মনিরুল মওলা কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন।

 ইসলামী ব্যাংকের এমডি মনিরুল মওলা কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন।


ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মুহাম্মদ মনিরুল মওলা বর্তমানে কর্মস্থলে অনুপস্থিত। ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের কিছু কর্মকর্তা গত বৃহস্পতিবার তাঁর পদত্যাগের দাবিতে চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করেছেন। এরপর ‘ইসলামী ব্যাংকিং সংস্কার ফোরাম’-এর নাম ব্যবহার করে এমডির পদত্যাগের পক্ষে পোস্টারও লাগানো হয়। পাশাপাশি, ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে এস আলম পরিবারসহ নিজ নামে মামলা হওয়ার পর থেকে রোববার থেকে তিনি কর্মস্থলে যাচ্ছেন না।

এমডির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ২৯ ডিসেম্বর ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেই সময় পর্যন্ত আন্দোলনরত কর্মকর্তাদের অপেক্ষা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২৮ ডিসেম্বর টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে ব্যাংকের ৪০০তম শাখার উদ্বোধন হবে, যেখানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ও ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ উপস্থিত থাকবেন। সেখানে এমডির বিষয়টি আলোচিত হতে পারে।



এ বিষয়ে জানাতে চাইলে, এমডি মুহাম্মদ মনিরুল মওলা প্রথম আলোকে বলেন, "অসুস্থতার কারণে চেয়ারম্যানের অনুমতি নিয়ে বাসা থেকে অফিস করছি। আজও (মঙ্গলবার) বাসায় থেকে অনেক ফাইলে স্বাক্ষর করেছি। আশা করছি, বৃহস্পতিবার সশরীর অফিস শুরু করব।"

২০১৭ সালে বিতর্কিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপ ইসলামী ব্যাংক দখলের পর, মুহাম্মদ মনিরুল মওলা অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে পদোন্নতি পান। তাঁর বাড়ি কক্সবাজার জেলায়। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে তিনি এমডি পদে নিয়োগ পান। তাঁর সময়ে, ইসলামী ব্যাংক থেকে বড় পরিমাণ অর্থ এস আলম গ্রুপ নামে–বেনামে সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সরকার পরিবর্তনের পর ব্যাংকটি এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণমুক্ত হলেও এমডি পদে কোনো পরিবর্তন হয়নি।

ব্যাংকের নিরীক্ষায় জানা গেছে, এস আলম গ্রুপ ও তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকার ঋণ উত্তোলন করেছে, যা ব্যাংকটির মোট ঋণের প্রায় ৫০ শতাংশ। সরকার পরিবর্তনের পর ব্যাংকটি নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে এবং ঋণ আদায়ের জন্য এস আলম গ্রুপের বিভিন্ন প্রকল্প পরিদর্শন করেছে। তবে ঋণ পরিশোধে সাড়া দিচ্ছেন না এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম, যার ফলে এসব ঋণ খেলাপি হতে শুরু করেছে।


f ff


সাইফুল আলম সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। ইসলামী ব্যাংক ছাড়াও, তাঁর নিয়ন্ত্রণে ছিল ন্যাশনাল ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক এবং বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর সম্প্রতি ব্রিটিশ গণমাধ্যম ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ডিজিএফআইয়ের সহায়তায় ব্যাংক দখল করার পর মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তাঁর সহযোগীরা ‘অন্তত’ ১০ বিলিয়ন বা ১ হাজার কোটি ডলার ব্যাংকব্যবস্থা থেকে ‘বের করে নিয়েছেন’।

Post a Comment

0 Comments