শোভাযাত্রার মুখোশে ফ্যাসিবাদ

 শোভাযাত্রার মুখোশে ফ্যাসিবাদ




আনন্দ শোভাযাত্রায় প্রতিবাদের মুখ – বৈশাখে ফ্যাসিবাদের প্রতিচ্ছবি

বাংলা নববর্ষ ১৪৩২-কে স্বাগত জানাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে আয়োজিত হয়েছে ঐতিহ্যবাহী আনন্দ শোভাযাত্রা। নববর্ষের এই উৎসবকে কেন্দ্র করে শোভাযাত্রা পরিণত হয়েছে এক বিশেষ সাংস্কৃতিক আকর্ষণে। তবে এবারের আয়োজন পেয়েছে নতুন মাত্রা—শোভাযাত্রার মূল আকর্ষণ হিসেবে ছিল ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’র প্রদর্শন।

এই প্রতীকী মুখের মাধ্যমে শিল্পীরা তুলে ধরেছেন দেশে দীর্ঘদিন ধরে চলা ফ্যাসিবাদী শাসনের রূপ ও প্রতিচ্ছবি। পহেলা বৈশাখের প্রাক্কালে, শোভাযাত্রার প্রস্তুতির সময় ‘ফ্যাসিবাদের মুখ’ আগুনে পুড়ে যাওয়ার ঘটনা কিছুটা উত্তেজনা এবং সংশয় তৈরি করেছিল—অনেকে প্রশ্ন তুলেছিলেন, আয়োজন কি আদৌ সফলভাবে সম্পন্ন হবে?

কিন্তু শিল্পীদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও সংকল্পের ফলেই, সেই মুখাকৃতি নতুনভাবে গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে। এখন সেটিই শোভাযাত্রার প্রাণ, দর্শনার্থীদের মধ্যে সৃষ্টি করেছে এক ভিন্ন মাত্রার আবেগ ও প্রতিরোধের বার্তা।

শোভাযাত্রা নির্বিঘ্নভাবে সম্পন্ন করতে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ছিল কড়া। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্রিয় উপস্থিতি ও প্রশাসনের প্রস্তুতি প্রশংসনীয়, যাতে কোনও বিশৃঙ্খলা ছাড়াই অনুষ্ঠানটি সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হয়।

fff

শতবর্ষের ঐতিহ্য বহন করা এই শোভাযাত্রা, যা পুরাতনকে বিদায় জানিয়ে নতুনকে স্বাগত জানায়, এবার আরও বৃহত্তর তাৎপর্য নিয়ে হাজির। ২০১৬ সালে ইউনেস্কোর বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পাওয়া এই শোভাযাত্রা এবার ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ থেকে রূপ নিয়েছে ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’য়।

এ বছরের শোভাযাত্রা শুধুই এক আনন্দ উদ্‌যাপন নয়—এটি এক প্রতীকী প্রতিবাদ, শিল্পের ভাষায় ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে এক স্পষ্ট অবস্থান। উৎসবের আবরণে তা হয়ে উঠেছে সময়ের প্রতিধ্বনি, যা দেশের মানুষের মাঝে এনেছে নববর্ষের আনন্দের পাশাপাশি আত্মচেতনার এক নতুন জোয়ার।



Post a Comment

0 Comments