ইসলামী ব্যাংক ৮৪৮ কোটি টাকার বেনামি ঋণের চেক ফেরত দিয়েছে

 ইসলামী ব্যাংক ৮৪৮ কোটি টাকার বেনামি ঋণের চেক ফেরত দিয়েছে

সরকার পরিবর্তনের পর ২০১৭ সালে দখল হওয়া বেসরকারি খাতের ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশে দ্রুত পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গত দুই দিনে ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয় এস আলম গ্রুপের দুটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ৮৪৮ কোটি টাকার বেনামি ঋণের চেক ফেরত দিয়েছে।


গতকাল বুধবার ৫৪৮ কোটি টাকার চেক ফেরত দেওয়া হয়েছে এবং তার আগের দিন ৩০০ কোটি টাকার চেক ফেরত দেওয়া হয়। ইসলামী ব্যাংক ঋণের বিপরীতে এসব অর্থ তুলে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে। এছাড়া, ২০১৭ সালের পর ব্যাংকে নিয়োগ পাওয়া এবং দ্রুত পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তাদের ব্যাংকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি।

f

সূত্র মতে, ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তায় এস আলম গ্রুপ ইসলামী ব্যাংক দখল করে। ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের তুলে নিয়ে রাজধানীর রেডিসন ব্লু হোটেলে ব্যাংকের মালিকানা বদল করা হয়। গভীর রাত পর্যন্ত কর্মকর্তাদের বসিয়ে রেখে অনুমোদন দেওয়া হয় তৎকালীন গভর্নর ফজলে কবির ও ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরীর দ্বারা।


অতীতে ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ কায়সার আলী গতকাল পদত্যাগে বাধ্য হন। তিনি এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। তার পদত্যাগের পর, কর্মকর্তাদের মধ্যে বেশ কিছু উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং ব্যাংকের সামনে বিক্ষোভ দেখা দেয়।


বিক্ষোভকারী কর্মকর্তারা দাবি করেছেন যে, ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠিত করতে হবে এবং এস আলম গ্রুপের ঋণ অনিয়মে সহায়তাকারী কর্মকর্তাদের দ্রুত চাকরিচ্যুত ও বিচার করা উচিত। এছাড়া, ২০১৭ সালের পর নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের নিয়োগ বাতিল করারও দাবি জানানো হয়েছে।

ff f

ব্যাংকের চলতি হিসাব ঋণাত্মক থাকায় কিছু চেক আরটিজিএস বা বিএসিএস পদ্ধতিতে নিষ্পত্তি হচ্ছে না। এর মধ্যে রূপালী ব্যাংকের মাধ্যমে ৫৪৮ কোটি ৩৯ লাখ টাকার একটি চেক জমা হয়েছে, যা সম্প্রতি টপ টেন ট্রেডিং হাউসের নামে অনুমোদিত হয়েছে। এছাড়া, সোনালী, জনতা ও রূপালী ব্যাংকের মাধ্যমে ৩০০ কোটি টাকার পাঁচটি চেকও জমা হয়েছে, যা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এসে আটকে দেওয়া হয়েছে।


ইসলামী ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শাখাগুলো নির্ধারিত পরিমাণের চেক নগদায়ন করতে পারে, তবে অধিক চেক নগদায়নের জন্য প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদন প্রয়োজন। এসব চেক প্রধান কার্যালয়ে আসার পর জানা যায়, এর সুবিধাভোগী এস আলম গ্রুপ। ফলে, এসব চেক ছাড় করা হয়নি এবং আপাতত এই ধরনের ঋণ ছাড় করা হবে না বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

 

Post a Comment

0 Comments