ইসলামী ব্যাংকের এস আলমের শেয়ার হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞার আবেদন করা হয়েছে।

 ইসলামী ব্যাংকের এস আলমের শেয়ার হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞার আবেদন করা হয়েছে।


ব্যক্তি শেয়ারধারী তথা বিনিয়োগকারীরা এস আলম গ্রুপের সরাসরি ও পরোক্ষভাবে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশে ধারণ করা শেয়ার হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা চেয়েছেন। তাঁদের দাবি, এসব শেয়ার ব্যাংক থেকে অবৈধ পন্থায় ঋণ নিয়ে এবং বৈধ শেয়ারধারীদের বাধ্য করে শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে অধিগ্রহণ করা হয়েছে। বর্তমানে এস আলম গ্রুপের কাছে ইসলামী ব্যাংকের প্রায় ৮২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।


আজ রোববার বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে পাঠানো চিঠিতে বিনিয়োগকারীরা এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।


চিঠিতে বিনিয়োগকারীরা উল্লেখ করেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশের ব্যাংক খাত বিশেষ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এস আলম গ্রুপ বিভিন্ন অবৈধ পন্থা ও প্রভাবের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে, সেই অর্থ দিয়ে দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন কোম্পানির মাধ্যমে শেয়ার কিনে ব্যাংকের মালিকানা নিজেদের হাতে নিয়েছে। এতে করে দীর্ঘদিনের শেয়ারধারীরা শেয়ার বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন, ফলে ইসলামী ব্যাংকের মোট শেয়ারের প্রায় ৮২ শতাংশ এস আলম গ্রুপের দখলে চলে গেছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, একটি বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নতুন সরকারের অধীনে বিগত শাসনামলের ফ্যাসিবাদী সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত শেয়ার বিক্রি করতে না পারে, সে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এস আলম গ্রুপ বর্তমানে ২৪টি প্রতিষ্ঠানের নামে ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার ধারণ করছে, যা আমানতকারী ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের জন্য হুমকি। তাই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চিঠিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।


অন্যদিকে, গভর্নরের কাছে দেওয়া আরেকটি চিঠিতে বিনিয়োগকারীরা ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, অসৎ পরিচালক ও কর্মকর্তাদের সহায়তায় ব্যাংক থেকে বিপুল অর্থ লোপাট ও পাচার করা হয়েছে। ব্যাংকের স্বাভাবিক কার্যক্রম পুনরুদ্ধার এবং আমানতকারীদের আস্থা ফেরাতে দ্রুত পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

ff f

২০১৭ সালে বিদায়ী আওয়ামী লীগ সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে ইসলামী ব্যাংকের মালিকানা ও ব্যবস্থাপনার নিয়ন্ত্রণ এস আলম গ্রুপের হাতে তুলে দেওয়া হয়, যা মূলত ব্যাংকটিকে 'জামায়াতমুক্ত' করার উদ্যোগ ছিল। এরপর সাত বছরের বেশি সময় ধরে এস আলম গ্রুপ এবং তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নাবিল গ্রুপ ব্যাংক থেকে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা তুলে নিয়েছে, যা ব্যাংকের মোট ঋণের এক-তৃতীয়াংশ। এসব কার্যক্রমে কোনো নিয়মকানুন মানা হয়নি, এবং এসব অর্থ এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে তোলা হয়েছে। ইসলামী ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান আহসানুল আলম এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলমের ছেলে।

Post a Comment

0 Comments