শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর বাংলাদেশে যে সহিংসতা চলছিল, তার মধ্যেই অনেক ভুয়া পোস্ট ভারতে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এই পোস্টগুলিতে দাবি করা হয় যে বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর ব্যাপক অত্যাচার শুরু হয়েছে।
বিবিসির তথ্য যাচাই বিভাগ ‘বিবিসি ভেরিফাই’ সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া পোস্টগুলির যাচাই করে দেখেছে যে, শেখ হাসিনার পতনের পর সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে তবে অনেক হামলার খবরও গুজব ছিল। বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ দাবি করেছে, শেখ হাসিনার পতনের পর দেশের ৫২টি জেলায় ২০৫টি হামলার ঘটনা ঘটেছে।
তবে এই হামলার প্রকৃতি নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি—সেগুলি ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে ছিল কি না, নাকি সরকারের ঘনিষ্ঠদের ওপর ক্ষোভের অংশ হিসেবে হামলা হয়েছে তা স্পষ্ট নয়।
এদিকে, ভারতের সরকার একটি বিশেষ কমিটি গঠন করেছে যা বাংলাদেশে বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিক, হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। বাংলাদেশের সরকারও হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একটি হটলাইন চালু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বিবিসির তথ্যানুসন্ধানে দেখা গেছে, সামাজিক মাধ্যমে বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর 'ব্যাপক অত্যাচার' হচ্ছে বলে যে ভুয়া পোস্টগুলো ছড়ানো হয়েছে, সেগুলির বেশিরভাগই ভারতীয় অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করা হয়েছিল। তবে বাংলাদেশের অভ্যন্তর থেকেও কিছু গুজব ছড়ানো হয়েছিল।
ফ্যাক্ট-চেকাররা নিশ্চিত করেছেন যে, কিছু হামলা ঘটেছে, তবে বেশিরভাগ হামলা ছিল রাজনৈতিক কারণের জন্য, ধর্মীয় পরিচয়ের জন্য নয়। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বাড়িতে হামলা হয়েছে, হিন্দু বা মুসলমান পরিচয়ের কারণে নয়।
ভারতের অতি-দক্ষিণপন্থী ইনফ্লুয়েন্সাররা বিভ্রান্তিকর ভিডিও শেয়ার করে বাংলাদেশের হিন্দুদের ওপর অত্যাচার নিয়ে মিথ্যা ধারণা তৈরি করেছেন। এর মধ্যে একটি ভিডিওতে দাবি করা হয়েছিল যে বাংলাদেশের হিন্দুদের গ্রাম আক্রমণ করা হয়েছে, কিন্তু আসলে ওই ভিডিওতে যে ব্যক্তি সাঁতার কাটছে, সে মুসলমান।
m
mm
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার জন্য একটি কমিটি গঠন করেছেন, এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারও একটি হটলাইন চালু করবে।
চট্টগ্রামের মন্দিরের বাইরে কিছু লোক গুজব ছড়ানোর বিরুদ্ধে সচেতনতার সাথে কথা বলেছেন এবং আসন্ন ভবিষ্যতে একসঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে কাটানোর আশাবাদ প্রকাশ করেছেন।

0 Comments