"ভয় আর আতঙ্কে সেই পুলিশ কর্মকর্তারা"

 "ভয় আর আতঙ্কে সেই পুলিশ কর্মকর্তারা"

শেখ হাসিনা সরকারের টানা ১৫ বছরের শাসনকালে পুলিশ বাহিনীতে ক্ষমতাধর এবং অতিমাত্রায় দলীয় আনুগত্যে চিহ্নিত হওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে এখন আতঙ্ক বিরাজ করছে। তারা চাকরি হারানোর পাশাপাশি মামলা, গ্রেপ্তার এবং জনরোষের ভয়ে আছেন। গত বৃহস্পতিবার পুলিশের সব সদস্যকে কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও, বেশ কিছু চিহ্নিত কর্মকর্তাকে কর্মস্থলে দেখা যায়নি।


সূত্র জানায়, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দিন পর্যন্ত এই কর্মকর্তাদের কেউ কেউ অত্যন্ত উৎসাহী ভূমিকা পালন করেছিলেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে তারা মাঠের পুলিশ সদস্যদের নানা নির্দেশনা দিচ্ছিলেন। কিন্তু ৫ আগস্ট দুপুরে শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং দেশ ত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়লে তারা আত্মগোপনে চলে যান। এরপর যখন থানাগুলো জনরোষের সম্মুখীন হয়, তখন অনেক থানা পুলিশ নিজেদের রক্ষায় ৫ আগস্ট রাতেও গুলি ছুড়ে।

ff f

পুলিশের সূত্রে জানা যায়, দলের আনুগত্যে চিহ্নিত এই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কঠোর ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) প্রধান ও অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলাম এবং ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া, রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি আব্দুল বাতেন এবং রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামানকেও চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। 


সরকারের পক্ষ থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে সব পুলিশ সদস্যকে কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও, অনেক কর্মকর্তা ওই দিন পর্যন্ত কর্মস্থলে যোগ দেননি। তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপারেশন্স) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এবং ডিবির যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার। 


তথ্যমতে, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর পুলিশ সদর দপ্তরের অপারেশন টাওয়ারে অবস্থান নেন তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, যেখানে অন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। বিকেলের দিকে বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশ সদর দপ্তর আক্রমণ করলে, তারা হেলিকপ্টারে করে আত্মগোপনে চলে যান।

fff

সরকারের নির্দেশনা মেনে পুলিশের অধিকাংশ কর্মকর্তা কর্মস্থলে যোগ দিলেও, তাদের অনেকেই আতঙ্কে আছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ অধীনস্থদের রোষানলে পড়েছেন, আর অনেকে চাকরি হারানোর শঙ্কায় রয়েছেন। এছাড়া, বিগত সরকারের আমলে ভালো পোস্টিং ও নিয়মিত পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তারাও কম গুরুত্বপূর্ণ পদে বদলি, শাস্তি বা মামলা হওয়ার আশঙ্কা করছেন। 


ইতিমধ্যে, বিএনপি পার্টি অফিসে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনসহ বেশ কিছু পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।

 

Post a Comment

0 Comments