আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে ৪০১ জনের চোখের দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে।

 আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে ৪০১ জনের চোখের দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে।


বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে ছররা গুলিতে ৪০১ জনের চোখ নষ্ট হয়েছে। এর মধ্যে ১৯ জন সম্পূর্ণভাবে দুই চোখের দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন এবং ৩৮২ জনের এক চোখের দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়েছে। এছাড়া ২ জনের দুই চোখ এবং ৪২ জনের এক চোখে গুরুতর দৃষ্টিস্বল্পতা দেখা দিয়েছে।

এই তথ্য জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল থেকে পাওয়া গেছে। গত ১৭ জুলাই থেকে ২৭ আগস্ট পর্যন্ত চোখে আঘাতপ্রাপ্ত ৮৫৬ জন ওই হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন, যার মধ্যে ৭১৮ জনকে ভর্তি করা হয়েছিল এবং ৫২০ জনের চোখে অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে।


গুলিতে দুই চোখের দৃষ্টি হারানোদের মধ্যে ছয়জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। বাকিদের মধ্যে শ্রমিক, গাড়িচালক এবং চাকরিজীবীসহ মোট ছয়জন এবং একজন শিক্ষক। এছাড়া ছয়জনের পেশা এখনও নিশ্চিত করা যায়নি।


বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় এবং পরবর্তী সময়ে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া ৫৭৯ জনের মধ্যে ৫৫৮ জন পুরুষ এবং ২১ জন নারী ছিলেন।

ff f

উত্তরখানের চানপাড়া এলাকার বাসিন্দা রাকিবুল ইসলাম, যিনি ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ষষ্ঠ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী, গত ১৮ জুলাই উত্তরার রাজলক্ষ্মী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আন্দোলনের সময় ছররা গুলিতে দুই চোখের দৃষ্টিশক্তি হারান। রাকিবুল জানান, গুলি লাগার পর তাঁর দুই চোখে একাধিক অস্ত্রোপচার হয়েছে এবং বাঁ চোখে হাতের নড়াচড়া আন্দাজ করতে পারলেও ডান চোখে পুরোপুরি ঝাপসা দেখেন।


জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গতকাল সোমবার পর্যন্ত ওই হাসপাতালে মোট ৫৩ জন রোগী ভর্তি ছিলেন, যাদের মধ্যে অন্তত তিনজন এখনো দুই চোখের দৃষ্টিশক্তি পুরোপুরি হারানোর শঙ্কায় রয়েছেন।


আন্দোলনের সময় গুলিতে দুই চোখ হারানো আরেক নির্মাণশ্রমিক দেলোয়ার হোসেন, যিনি উত্তরার দেওয়ানবাড়ী এলাকায় থাকেন, ২০ জুলাই সন্ধ্যায় খিলক্ষেত থেকে বাসায় ফেরার পথে আজমপুর রেলক্রসিং এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন। দেলোয়ার জানান, পুলিশের ছোড়া ছররা গুলি তাঁর চোখে ও মুখে লাগে, এবং পিঠেও বেশ কয়েকটি গুলি লাগে।


গত ২১ জুলাই বাড্ডার গুদারাঘাট এলাকায় দুই বছর তিন মাস বয়সী শিশু তানিয়া ছররা গুলিতে বাঁ চোখের দৃষ্টিশক্তি হারায়। তার দাদা, চা-দোকানি মোহাম্মদ তোজাম্মল জানান, চোখে গুলি লাগার পর বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা করিয়েও তানিয়ার বাঁ চোখের দৃষ্টি ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি।

f ff

জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক খায়ের আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের মধ্যে অন্তত তিনজন এখনো দুই চোখের দৃষ্টি পুরোপুরি হারানোর শঙ্কায় রয়েছেন। এর বাইরে অনেকের এক চোখের অবস্থা খুবই খারাপ।’

Post a Comment

0 Comments