জামায়াত বিএনপিকে বাদ দিয়ে নতুন জোট গঠনের পরিকল্পনা করছে।

 জামায়াত বিএনপিকে বাদ দিয়ে নতুন জোট গঠনের পরিকল্পনা করছে।


ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। সেই সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর কৌশলেও পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। নতুন উদ্যমে কার্যক্রম শুরু করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দীর্ঘদিন বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ থাকা দলটি এবার আলাদা জোট গঠনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ লক্ষ্যে সমমনা ইসলামি দলগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের উদ্দেশ্যে আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে জামায়াতের নেতারা।

ff f

দলীয় সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, বিএনপির সঙ্গে যৌথভাবে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের সম্ভাবনা অনেকটাই ক্ষীণ। তাই পরিস্থিতির পর্যালোচনায় জামায়াত আলাদা ইসলামি জোট গঠনের কথা ভাবছে। এ জন্য তারা ইতোমধ্যে বিভিন্ন ইসলামি দল ও সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করেছে। ১৫ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে চরমোনাই পীরের ইসলামী আন্দোলন, ১২ দলীয় জোট, জাকের পার্টি, লেবার পার্টি এবং খেলাফত মজলিসের দুই অংশসহ বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনা করেছে জামায়াত। এছাড়া, জামায়াতের শীর্ষ নেতারা হেফাজতে ইসলামের আজিজুল হক ইসলামাবাদী এবং খেলাফত মজলিসের মাওলানা মামুনুল হকসহ বিভিন্ন আলেমের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন।


জামায়াতের নীতিনির্ধারকরা বলছেন, মতের পার্থক্য থাকলেও ইসলামি দলগুলোর সঙ্গে ঐক্য গড়ার প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করছে জামায়াত। তবে আলোচনা এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। যদিও নির্বাচন নিয়ে আলোচনাও সামনে আসছে, তবে এখনই কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি।


১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে জামায়াতে ইসলামী এককভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে যথাক্রমে ১২ দশমিক ১ এবং ৮ দশমিক ৬ শতাংশ ভোট পায়। ২০০১ এবং ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে তারা অংশ নেয়। কিন্তু ২০১৮ সালে নিবন্ধন হারানোর পর তারা বিএনপির প্রতীকে নির্বাচন করে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিএনপি-জামায়াতের সম্পর্ক শিথিল হয়েছে। ২৯ আগস্ট বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমাদের যে আন্দোলনের জন্য জোট ছিল, সেটা এখন কার্যকর নয়।’ পরদিন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের আর কোনো আনুষ্ঠানিক জোট নেই।

ff f

জামায়াতের কেন্দ্রীয় এক নেতা জানান, ‘বিএনপির সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে, কিন্তু পুরোপুরি বিচ্ছিন্নতা হয়নি। যদিও আনুষ্ঠানিক কোনো বৈঠক হচ্ছে না, আমরা বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।’


জামায়াতের নেতারা মনে করেন, গত ১৫ বছর ধরে তাদের নেতা-কর্মীরা যে নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়েছেন, সেই পরিস্থিতির কারণে এখন তারা আরও স্বাধীনভাবে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারছেন। রাজধানীসহ সারা দেশে দলীয় কার্যক্রম সক্রিয়ভাবে চালানো হচ্ছে, যা আগামী নির্বাচনে প্রতিফলিত হবে বলে আশা করছেন দলের নীতিনির্ধারকরা। জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম জানান, ‘পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। জোট হলে তা পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে হবে।’


Post a Comment

0 Comments