জামায়াতের আমির বলেছেন, শুধু বাজারেই নয়, অফিস, আদালত ও বাহিনী—সব জায়গায়ই সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে।

জামায়াতের আমির বলেছেন, শুধু বাজারেই নয়, অফিস, আদালত ও বাহিনী—সব জায়গায়ই সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে।


 জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান অভিযোগ করেছেন, জাতিকে এখনো বিগত স্বৈরশাসকদের জুলুমের বোঝা বহন করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, “মুষ্টিমেয় কিছু দুর্বৃত্ত ছাড়া এই জাতির ১৮ কোটি মানুষ আজও মজলুম। বাজারে গেলে মানুষের চোখ অন্ধকার হয়ে আসে, কারণ সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে তারা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে পারছে না। তাদের আমলে গড়ে ওঠা এসব সিন্ডিকেট এখনো সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে রয়েছে। শুধু বাজারেই নয়, অফিস, আদালত, বাহিনী—সব জায়গায়ই সিন্ডিকেটের প্রভাব রয়েছে।”

আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের সদস্য সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।


শফিকুর রহমান আরও বলেন, “এই জাতি যে পরিবর্তন ও সংস্কার আশা করেছিল, তা এখনো পুরোপুরি হয়নি। যারা দায়িত্বে আছেন, তাদের উচিত ১৮ কোটি মানুষের সম্মান ও দাবি পূরণের জন্য সাহসিকতার সঙ্গে এগিয়ে যাওয়া। বিপ্লবের চেতনায় দেশকে সব জঞ্জাল থেকে মুক্ত করার আহ্বান জানাচ্ছি।”


সম্মেলনে তিনি দলমত নির্বিশেষে সবাইকে মানবিক বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানান। শফিকুর রহমান বলেন, “এটা একা জামায়াতের কাজ নয়; দেশকে মানবিক সমাজে পরিণত করতে সব দলের ঐক্য প্রয়োজন। আসুন, সব ভেদাভেদ ভুলে আমরা দেশের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হই।”


সম্মেলনের আগে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের লগি-বইঠার হামলা, যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে জামায়াতের নেতাদের বিচার ও সাম্প্রতিক গণহত্যার ওপর একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। এর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শফিকুর রহমান বলেন, “ডকুমেন্টারিতে দেখেছি, কীভাবে যুবসমাজের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এভাবে গদি রক্ষা করা যায় না।”


তিনি আরও বলেন, “এই জাতি আর মিথ্যা মামলা ও নেতাদের ফাঁসির শাস্তি বরদাশত করবে না। আমরা এমন একটি দেশ চাই, যেখানে নারী-শিশু, সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষ নিরাপদে বসবাস করতে পারবে এবং যুবকদের কর্মমুখর জীবন নিশ্চিত হবে। আমরা শিক্ষিত বেকার চাই না, বরং কর্মদক্ষ যুবক চাই।”


এছাড়াও, শফিকুর রহমান বলেন, “আমরা এমন একটি রাষ্ট্র চাই যেখানে একজন মা বা বোন নিরাপদে চলাফেরা করতে পারবে। পুরো দেশজুড়ে নাগরিকদের সুরক্ষা ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে।”

f ff

জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের তার বক্তব্যে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের এবং সেই সময়কার নেপথ্য নায়ক শেখ হাসিনার বিচারের দাবি জানান।


গণ-অভ্যুত্থানের পর চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে উল্লেখ করে তাহের বলেন, “ষড়যন্ত্র, হত্যা সব সময় ছিল এবং থাকবে। আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে।” 


ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদের পরিচালনায় এই সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মতিউর রহমান আকন্দ, মো. সেলিম উদ্দিনসহ দলের নেতারা।

Post a Comment

0 Comments